মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন থেকেই নিজেদের সেরাট দিয়েছে বাংলাদেশ দল। প্রথমদিনে মাহমুদুল হাসান জয় এবং নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটিং দৃঢ়তায় চালকের আসনে বসে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই ৩৮২ রানে অলআউট হয়ে আফগানিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। ১ম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেই হোঁচট খায় আফগানরা। নিয়মিত বিরতিতে একের পর এক ব্যাটসম্যান সাজ ঘরে ফিরলেও নাসির জামাল ও আফসার জাজাই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন।
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হলে দুই জনের পার্টনারশিপ ভাঙে। এরপর, আর কোনো আফগান ব্যাটারই টাইগারদের বোলিং তোপের সামনে ইনিংস বড় করে দলকে ভালো সংগ্রহ এনে দিতে পারেননি।
১ম ইনিংসে টাইগার পেসারদের দাপুটে বোলিংয়ে মাত্র ১৪৬ রান করে অলআউট হয় আফগানিস্তান। ২৩৬ রানের বিশাল লিড নিয়ে ২য় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেই ধাক্কা খায় টাইগাররা। ১ম ইনিংসে দূর্দান্ত ব্যাটিং করা মাহমুদুল হাসান জয় ইনিংসের শুরুতেই প্যাভিলিয়নে ফিরেন।
তারপর, জাকির হাসানকে সাথে নিয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটিংয়ের প্রদর্শন দেখান ১ম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা নাজমুল হোসেন শান্ত। দুই জনই ধৈর্যশীল ব্যাটিং করে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেন।
৩৭০ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেন জাকির ও শান্ত। দিনের শুরুটা ভালো করেন দুই টাইগার ব্যাটসম্যান। ৭১ রান করে জাকির হাসান রান আউট হয়ে মাঠ ছাড়লেও অপরপ্রান্তে ঠিকই ধরে রেখেছিলেন শান্ত।
ফলে, ইনিংসের ৪০তম ওভারে আবারও শতক পূর্ণ করেন দারুণ ফর্মে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত। মুমিনল হকের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান হিসেবে এক টেস্টের দুই ইনিংসেই শতক পূর্ণ করার অন্যান্য কীর্তি করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
সেঞ্চুরি করে নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হলেও ফিফটি করার পর ২৬ ম্যাচ পর প্রথম শতক তুলে নেন ফর্মহীনতায় ভুগতে থাকা মুমিনুল হক। দেশের হয়ে ক্যারিয়ারের ১২তম শতক করে রেকর্ড করেন এই বাঁহাতি টেস্ট ব্যাটার।
অধিনায়ক লিটন দাসও তার অর্ধ শতক পূর্ণ করেন মুমিনুল হকের সাথে ব্যাটিং চালিয়ে যান৷ অবশেষে ইনিংসের ৮০তম ওভারের শেষে ১৪৩ রানের পার্টনারশিপ করে নিজেদের ইনিংস ডিক্লেয়ার ঘোষণা করেন অধিনায়ক লিটন দাস।
ফলে, আফগানদের সামনে মিরপুর টেস্ট জয়ের জন্য ৬৬২ রানের বিশাল লক্ষ্য দাঁড় করায় টাইগাররা৷ প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটার হিসেবে প্রথম ৩ টেস্ট ম্যাচে অর্ধ শতক করার রেকর্ড গড়েন জাকির হাসান।
৬৬২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারের প্রথম বলেই শরীফুলের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন আফগান ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান। তার সঙ্গী ওপেনার আব্দুল মালিকও পরের ওভারে তাসকিনের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন।
টাইগার বোলারদের সামনে ছন্নছাড়া ব্যাটিং প্রদর্শন করা আফগানিস্তান দলের ব্যাটিং হাল ধরার চেষ্টা করেন অধিনায়ক হাসমাতুল্লাহ শহিদী এবং রহমত শাহ। হাসমাতুল্লাহ চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লে তার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন নাসির জামাল।
অবশেষে, আর উইকেট না হারিয়ে ৪৫ রানে ২ উইকেটের বিনিময়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে আফগানরা। শেষ দুই দিনে ম্যাচ জিততে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ৬১৭ রান এবং বাংলাদেশের প্রয়োজন ৮ উইকেট।