অন্ডকোষের রোগ ও চিকিৎসা – পুরুষ প্রজনন তন্ত্রের সর্বাপেক্ষা এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো অন্ডকোষ। এটি ছেলেদের সবচেয়ে সংবেদনশীল স্থান। তবে প্রায়শই অন্ডকোষে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তাই অন্ডকোষের রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানা উচিত। তার আগে চলুন অন্ডকোষ সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা নেওয়া যাক।
Table of Contents
অন্ডকোষ
মূলত পুরুষ প্রজনন অঙ্গের নীচে বিদ্যমান থলিকেই অন্ডকোষ বলে। এখানে পুরুষদের স্পার্ম বা শুক্রাণু তৈরী হয় যা মেয়েদের ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলিত হয়ে প্রাণের সঞ্চার করে৷
পুরুষের এই সংবেদনশীল অঙ্গ দুটি দেহগহ্বরের বাইরে থাকে। কারণ দেহের ভেতর তাপমাত্রা অধিক থাকে ফলে শুক্রাণু নিষেকের উপযোগী থাকে না। আর তাই অন্ডকোষ দুটি দেহগহ্বরের বাইরে অন্ডথলি নামে একটি থলির মধ্যে থাকে।
অন্ডকোষ থেকে যেমন শুক্রাণু তৈরী হয় তেমনি টেস্টোস্টেরন হরমোনও তৈরী করে। পুরুষের এই অন্ডকোষ দুটি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। নীচে সাধারণ কিছু অন্ডকোষের রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো।
অন্ডকোষের ৬টি রোগ ও চিকিৎসা ভিডিও তে দেখতে এখানে ক্লিক করুন
অন্ডকোষের রোগ ও চিকিৎসা
নিচে অন্ডকোষের ৬ টি রোগ এবং এর সম্ভাব্য চিকিৎসা সমূহ নিয়ে বর্ণনা করা হলো-
১. অন্ডকোষের প্রদাহ:
এটা অন্ডকোষের এক ধরনের সংক্রমণের কারণে হয়। এক্ষেত্রে রোগীর প্রচন্ড জ্বর হয় এবং অন্ডকোষ ফুলে যায়। পাশাপাশি প্রস্রাবের সময় ব্যথা, বমি বা বমিভাব থাকতে পারে।
চিকিৎসা:
সাধারণত ডাক্তারেরা ইনফেকশন সারাতে অ্যান্টিবায়োটিক এবং ব্যথা বা প্রদাহ কমানোর জন্য ব্যথানাশক ঔষধ দিয়ে থাকেন। এছাড়া বিশ্রম ও বরফ বা আইস প্যাক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
২. হার্নিয়া:
অন্ডকোষের একটি কমন রোগ হলো হার্নিয়া। বেশির ভাগ হার্নিয়াতে অন্ডকোষের ব্যথা হয় না কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে হার্নিয়া থাকলে পেটের নাড়ী ভুড়িতে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায় ফলে জরুরী চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন।
চিকিৎসা:
জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবাং প্রাথমিক চিকিৎসায় উপসর্গ কিছুটা হ্রাস করা সম্ভব। তবে কার্যকরভাবে হার্নিয়া চিকিৎসার একমাত্র উপায় হলো অস্ত্রপচার। হার্নিয়ার প্রকৃতি, আপনার উপসর্গ এবং আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে সাধারণত সার্জন এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন।
- গনোরিয়া রোগ থেকে মুক্তির উপায় জেনে নিন!
৩. অন্ডথলি ফুলে যাওয়া:
অন্ডকোষের বিভিন্ন রোগের মধ্যে অন্ডথলি ফুলে যাওয়া একটি স্বাভাবিক রোগ। অন্ডকোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণেই সাধারণত অন্ডথলি ফুলে যায়। যেকোনো বয়সে পুরুষের এই সমস্যা হতে পারে। এর সাথে ব্যথা হতেও পারে আবার না-ও হতে পারে।
চিকিৎসা:
প্রথমেই ডাক্তারের কাছে না গিয়ে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ফোলাভাব দেখা দেওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে অন্ডথলিতে বরফ ব্যবহার করুন। সিটজ বাথ নিতে পারেন, এটি ফোলা কমাতে সহায়তা করবে। বিশ্রাম নিন এবং কঠিন পরিশ্রমের কাজগুলো করবেন না। এর পরেও যদি সমস্যা সমাধান না হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিনি।
৪. অন্ডকোষের টিউমার:
বিভিন্ন কারণে টেস্টিস বা অন্ডকোষের টিউমার হয়ে থাকে। জন্মের পর টেস্টিস সঠিক জায়গায় না থাকলে ঐ টেস্টিসের টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। টিউমার হলে অন্ডকোষ অস্বাভাবিক ভাবে বড় হতে থাকে। সাধারণত অন্ডকোষের টিউমার ক্যান্সারে পরিণত হয়ে থাকে। তাই সঠিক সময় চিকিৎসা না করলে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে এবং মৃত্যু অনিবার্য।
চিকিৎসা:
টিউমার বা ক্যান্সারের ধরন এবং পর্যায়, সেই সঙ্গে কারণের উপর নির্ভর করে টিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এই ক্ষেত্রে সাধারণত সার্জারি, রেডিয়েশন থেরাপি বা কোমোথেরাপি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
টিউমার ভালো করার ৭টি উপায় জেনে নিন!
৫. হাইড্রোসিল:
এ রোগ ধীরে ধীরে হয় এবং শুরুতে তেমন কোন সমস্যা হয় না। অন্ডকোষ ফুলে যায় কিন্তু ব্যথা হয় না। এ রোগে অন্ডকোষের ফোলা কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস লাগে। তবে হাইড্রোসিলের আকৃতি বেড়ে গেলে রোগী অস্বস্তিবোধ করে।
চিকিৎসা:
হাইড্রোসিলের চিকিৎসার জন্য কোন ওষুধ নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি ছয় থেকে ১২ মাসের মধ্যে নিজে থেকেই ভাল হয়ে যায়। যদি তা না হয় তাহলে জটিলতা এড়াতে ডাক্তাররা সাধারণত সার্জারির পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
৬. টরসন:
এই রোগ হলে টেস্টিসে হটাৎ প্রচন্ড ব্যথা হয়। ৫ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে এই রোগ বেশি হয়। এই রোগে টেস্টিস প্যাঁচ খেয়ে যায়, ফলে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায় এবং টেস্টিস বা অন্ডকোষ তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
চিকিৎসা:
টেস্টিকুলার টর্সন ঠিক করতে সার্জারির প্রয়োজন হয়। কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার স্ক্রোটাম (ম্যানুয়াল ডিটোরসন) এ চাপ দিয়ে অণ্ডকোষটি খালি করতে সক্ষম হতে পারে। কিন্তু টর্সন যাতে আবার না হয় তার জন্য আপনার সার্জারির প্রয়োজন হবে।
উপসংহার
এখানে আমরা কিছু অন্ডকোষের রোগ ও চিকিৎসা বিষয়ে বলেছি। মনে রাখবেন এগুলো সাধারণ সর্দি-জ্বরের মতো নয় যে নিজেই ফার্মেসি থেকে ঔষধ কিনে খাবেন। তবে এই রোগগুলো সম্পর্কে সচেতনতা আপনাকে বড় ধরণের জটিলতা এড়াতে সহায়তা করতে পারবে।
আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন!
স্বাস্থ্য বিষয়ক আরও তথ্য জানুন…
অন্ডকোষ এর দুই ধারে লালচে-ধূসর দাগ এবং সক্ত মনে হচ্ছে এর জন্য করনিয় কি?
অন্ডকোষের থলির চামরা উপরে সালের মত ছোট ছোট বিচি অনেক আগে থেকেই আছে। আমার ধারণা বিচির গোড়া হতে রক্ত বের হচ্ছে। প্রথমবার ৩রা ডিসেম্বর/২১ ও আজকে(০১-১০-২২) বের হচ্ছে। আপনার পরামর্শ চাই। বয়স-৬১ বছর।
আমার অন্ডকোষ হাল্কা যন্ত্রনা হয়
সিমেন টেস্ট করার পর এযস ফারমিয়া দেখা দেয় এখন কোন ধরনের ডাক্তার দেখাবো?
আমার অন্ডকোষ খুব জ্বলে ধরা ও যায়না কেন,,