কিডনি রোগীর খাবার – আমাদের দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ছে। কিডনি রোগ হলে শংকিত হওয়ারই কথা তবে কিডনি রোগ মানে সব শেষ নয়। সুস্থ জীবনধারা ও খাদ্যাভাস মেনে চললে আজীবন সুস্থ থাকা যায় কিডনি রোগ নিয়েই।কিডনি রোগীদের মধ্যে দেখা যায় বেশিরভাগই খাদ্যাভাসে সচেতন নন। ফলে তিনি কিডনি জটিলতায় ভুগতে থাকেন।
তাই আমাদের জানতে হবে কিডনি রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি কিডনি রোগীর খাবার কেমন হবে। সঠিক খাদ্যতালিকা হতে পারে কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রনে করে ভাল ভাবে বেঁচে থাকার উপায়।
১২ টি উপায়ে কিডনি সুস্থ্য রাখার টিপস ভিডিও তে দেখতে এখানে ক্লিক করুন!
Table of Contents
কিডনি রোগীর খাবার
আমাদের দেশে কিডনি রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই দেখা যায় আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিকসে আক্রান্ত।এছাড়াও অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা,অতিরিক্ত ওজন, খাদ্যাভাস এসবও কিডনি রোগের জন্য দায়ী। কিডনি রোগ নতুন বা পুরাতন যাই হোক সঠিক খাদ্যতালিকা নির্বাচন হতে পারে কিডনি রোগের চিকিৎসার প্রধান উপায়।
কিডনি রোগীর খাবার খুব হিসাব-নিকাশ করে নির্বাচন করতে হয়।কিডনি রোগের চিকিৎসায় সূষম খাদ্য অনেক জরুরি। কিডনি রোগীর খাদ্য তালিকা এমন হতে হবে যাবে সব খাদ্য উপাদান থাকে।
তবে আমাদের মধ্যে ভ্রান্ত ধারনা আছে কিডনি রোগীর মাছ, মাংস, ডিম, দুধ খাওয়া চলবে না। কিডনি রোগীর খাদ্যাতালিকা এমন হবে যাতে রোগীর পুষ্টির ঘাটতি না হয় এবং কিডনি সমস্যাও নিয়ন্ত্রনে থাকে।
প্রোটিন:
আমরা জানি কিডনি রোগীদের খাদ্যের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হয়।প্রথমেই জরুরী প্রোটিন নিয়ন্ত্রন।ডাল,কাঠালের বা শিমের বিচি, বাদাম,মটরশুটি এসব খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।মাছ, মাংস, ডিম, দুধ স্বল্প পরিমাণে খেতে হবে।গরু,খাসির মাংস,কলিজা, মগজ এসব খাওয়া যাবে না।
কার্বোহাইড্রেট:
প্রোটিন নিয়ন্ত্রন করা হলেও কিডনি রোগীর খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেটকে প্রাধান্য দেয়া হয়।কিডনি রোগীর মোট ক্যালরি বেশিরভাগ শর্করা থেকে আসে। ভাত,ময়দা,চিনি, আটা,রুটি, সেমাই ইত্যাদি কিডনি রোগীর জন্য ভাল শর্করার উৎস।
তরল পানীয়:
যারা কিডনি সমস্যায় ভুগছেন তাদের তরল বা পানীয় নিয়ন্ত্রন করতে বলা হয়।অনেকে কিডনি সমস্যা হয়েছে শুনলেই পানি খাওয়া পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। অনেকে মনে করে বেশি পানি খাওয়া অসুস্থ কিডনিকে সুস্থ করতে সাহায্য করবে সেটা ভুল।প্রতিদিনের কিডনি রোগীর খাবার এর সাথে পানি,চা, দুধসহ যেসব পানীয় গ্রহন করছে সতর্কতার সাথে হিসাব রাখতে হবে।
লবণ:
কিডনি রোগীদের লবন ও সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। অতিরিক্ত লবণ গ্রহন ও সোডিয়ামযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।খাবারে যাতে কোনভাবেই বাড়তি লবণ বা টেস্টিং সল্ট না থাকে। অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার যেমন :চানাচুর,পাপড়,আচার এসব পরিহার কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রনের সাথে প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। কেননা অতিরিক্ত লবন গ্রহন কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
>> কিডনি ভালো রাখার ১২টি গুরুত্বপূর্ণ উপায় জেনে নিন!
কি কি খাবার খাওয়া যাবে
সবজির মধ্যে চিচিঙ্গা, লাউ, করলা, শসা, সজনে, মুলা, ডাটাশাক, লালশাক, কচুশাক ঝিংগা, পেঁপেঁ কিডনি রোগীর খাবার হিসেবে খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ সীমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে।
ফল খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে কারন পটাশিয়াম এর পরিমাণ বেশি এমন ফল খাওয়া যাবে না। তবে কিডনি রোগীর জন্য আপেল, নাশপাতি, বড়ই, আনারস,পেয়ারা,চেরি,পাকা পেঁপে, বেদানা খাওয়া ভাল ।পেয়াজ রসুনে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট কিডনিকে ভাল রাখতে সাহায্য করে।
>> পুষ্টিকর খাবার সম্পর্কে জানুন!
কি কি খাওয়া যাবে না
কিডনি রোগীর পথ্য নির্বাচন কিডনিকে ভাল রাখতে অনেক জরুরী। তাই কোন কোন খাবার কিডনি রোগীরা খেতে পারবেন না তা অবশ্যই জানা থাকতে হবে।কিডনি রোগীর শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়তে থাকে তাই ডাব, কলা আংগুরসহ বেশি পটাশিয়াম যুক্ত ফল একদমই খাওয়া যাবে না।
সোডিয়াম বা অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার, চিপস, নোনা ইলিশ, ডালজাতীয় খাবার, কাচা সবজি,কফি, কোমল পানীয় জর্দা, তামাক,জাংকফুড খাওয়া যাবে না। আলু, কচু,মিষ্টি আলু, ফুলকপি, বাধাকপি, গাজর, ঢেঁরস এসকল সবজি খাওয়া যাবে না।
উপসংহার
আমাদের দেশের জন্য কিডনি রোগ ভয়াবহ। কেননা কিডনি রোগের চিকিৎসা ব্যায়বহুল এবং এ রোগের ব্যাপকতাও বেশি। কিডনি রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি খাদ্যা তালিকাও সঠিক হওয়া জরুরি। কিডনি রোগীর খাদ্য গ্রহনে সতর্ক থাকতে হবে।
কিডনি রোগীর খাবার নির্বাচন এমন হবে যাতে সব পুষ্টিউপাদান বিদ্যমান থাকে এবং কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রন করেও শরীরের পুষ্টির ঘাটতি না হয়। সঠিক খাদ্য নির্বাচন ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনধারা মেনে চললে কিডনি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
Usefull artical.very good presentation