দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে বসতে চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে পুরাতন মহাদেশীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকা। দক্ষিণ আমেরিকার ১০ দলের পাশাপাশি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের ৬টি দলসহ মোট ১৬টি দল খেলবে এবারের আসরে।
দক্ষিণ আমেরিকার দলগুলোর সাথে উত্তর আমেরিকা অঞ্চল থেকে সরাসরি সুযোগ পেয়েছে ২০২৩-২০২৪ কনকাকাফ ন্যাশন্স লিগের সেমি ফাইনালিস্ট হওয়া ৪ দল। বাকি ২ দল আসবে প্লে-অফ রাউন্ড পেরিয়ে।
৪৮তম কোপা আমেরিকার আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র
কোপা আমেরিকার এবারের আসর এককভাবে আয়োজন করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ৪৮তম এই আসরের আয়োজক হিসেবে ইকুয়েডরের থাকার কথা থাকলেও পরে আয়োজক হিসেবে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে দেশটি।
আয়োজক হিসেবে ইকুয়েডর নিজেদের নাম সরিয়ে নিলে আয়োজক হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে পেরু ও যুক্তরাষ্ট্র। ফলে, দুই মহাদেশের ভিন্ন দুই দেশের যৌথ অংশগ্রহণে আয়োজন হওয়ার কথা থাকলেও দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা (কনমেবল) শেষ পর্যন্ত আয়োজক হিসেবে এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নাম ঘোষণা করে।
কানাডা ও মেক্সিকোর সাথে যৌথভাবে যুক্তরাষ্ট্র ২০২৬ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে থাকায়, ৪৮ দলের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক এই আসরের আগে প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের নাম বেচে নেয় কনমেবল ও কনকাকাফ।
যুক্তরাষ্ট্রের ১৪টি শহরের মোট ১৪টি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনালসহ কোপা আমেরিকার মোট ৩২টি ম্যাচ। স্টেডিয়াম গুলো হলো :
শহর | স্টেডিয়াম | ধারণক্ষমতা |
আর্লিংটন | এ.টি.এন্ড টি স্টেডিয়াম | ৮০,০০০ |
আটলান্টা | মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়াম | ৭১,০০০ |
অস্টিন | কিউ-টু স্টেডিয়াম | ২০,৭৩৮ |
শার্লট | ব্যাংক অফ আমেরিকা স্টেডিয়াম | ৭৪,৮৬৭ |
নিউ ইয়র্ক | মেট লাইফ স্টেডিয়াম | ৮২,৫৬৬ |
হোস্টন | এন.আর.জি স্টেডিয়াম | ৭২,২২০ |
ইঙ্গ্লিউড, ক্যালিফোর্নিয়া | সৌফাই স্টেডিয়াম | ৭০,২৪০ |
সান্টা ক্লারা | লেভিস স্টেডিয়াম | ৬৮,৫০০ |
গ্ল্যানডেল | স্টেট ফার্ম স্টেডিয়াম | ৬৩,৪০০ |
অর্লেন্ডো | এক্সপ্লোরিয়া স্টেডিয়াম | ২৫,৫০০ |
কানসাস সিটি (মিসৌরি) | অ্যারোহোড স্টেডিয়াম | ৭৬,৪১৬ |
কানসাস সিটি (কানসাস) | চিল্ড্রেন্স মার্সি পার্ক | ১৮,৪৬৭ |
মিয়ামি গার্ডেন্স | হার্ড রক স্টেডিয়াম | ৬৪,৭৬৭ |
প্যারাডাইস, নেভাদা | অ্যালিজেন্ট স্টেডিয়াম | ৬১,০০০ |
সহজ গ্রুপে আর্জেন্টিনা, তুলনামূলক কঠিন প্রতিপক্ষ ব্রাজিল ও উরুগুয়ের
জুনে হতে যাওয়া আমেরিকা অঞ্চলের সবচেয়ে বড় এই আসরকে সমানে রেখে ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে গ্রুপ পর্বের ড্র। ১৬টি দেশকে ভাগ করা হয়েছে ৪টি ভিন্ন গ্রুপে।
যেকোনো দুই গ্রুপে কনমেবল থেকে সর্বনিম্ন ২টি দল থাকতে হবে এবং বাকি দুই গ্রুপে কনমেবল অঞ্চলের সর্বোচ্চ ৩টি দল জায়গা পাবে। কনকাকাফের ক্ষেত্রে প্রত্যেক গ্রুপে একটি করে এবং যেকোনো দু’টি গ্রুপে ২টি করে দল গ্রুপে থাকবে এমন শর্ত নিয়ে সম্পন্ন হয় গ্রুপ ড্র।
গ্রুপ-এ’তে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার সাথে জায়গা পেয়েছে কনমেবল অঞ্চলের দুই দল চিলি ও পেরু। চতুর্থ দল হিসেবে কনকাকাফ অঞ্চল থেকে প্লে-অফ রাউন্ড পেরিয়ে আসবে একটি দল।
গ্রুপ-বি’তে জায়গা পেয়েছে কনকাকাফ গোল্ড কাপের বর্তমান বিজয়ী মেক্সিকো। বাকি ৩ দেশ হিসেবে আছে যথাক্রমে জ্যামাইকা, ইকুয়েডর ও ভেনেজুয়েলা।
গ্রুপ-সি’তে আছে দুই মহাদেশের জনপ্রিয় দুই দল যুক্তরাষ্ট্র ও উরুগুয়ে। তাদের সাথে একই গ্রুপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে পানামা ও বলিভিয়া।
গ্রুপ-ডি’তে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আছে মোট তিনটি দল। পাঁচবারের বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিলের সাথে আছে কলম্বিয়া এবং প্যারাগুয়ে। কনকাকাফ থেকে প্লে-অফ রাউন্ডের বাধা পেরিয়ে গ্রুপ-ডি’তে আসবে যেকোনো একটি দল।
প্লে-অফ রাউন্ডের দু’টি ম্যাচের প্রথমটি হবে কানাডা বনাম ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগোর মধ্যে এবং দ্বিতীয় ম্যাচটিতে কোস্টারিকার মুখোমুখি হবে হন্ডুরাস। উভয় ম্যাচের জয়ী দল যাবে যথাক্রমে গ্রুপ-এ ও গ্রুপ-ডি’তে। প্লে-অফ রাউন্ডের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩ মার্চ ২০২৪ তারিখে।
চলতি বছরের জুনে পর্দা উঠবে টুর্নামেন্টটির
কোপা আমেরিকার ৪৮তম এই আসর শুরু হবে চলতি বছরের ২০ জুন। আসর শুরুর দিনে প্রথম ম্যাচে তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামবে প্রথম প্লে-অফ রাউন্ড থেকে আসা যেকোনো এক দল।
গ্রুপ পর্ব শেষে প্রত্যেক গ্রুপের শীর্ষ দুই দল যাবে কোয়ার্টার ফাইনালে। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে যথাক্রমে সেমি ফাইনাল এবং ফাইনালের মধ্য দিয়ে ১৪ জুলাই পর্দা নামবে এই আসরের।
ফাইনালের আগে অনুষ্ঠিত হবে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ। দুই সেমিফাইনালে হেরে বাদ পড়া দলগুলো খেলবে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে। আসরের ফাইনাল ম্যাচ হবে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মিয়ামি গার্ডেন্সে প্রায় ৬৫ হাজার দর্শকের সামনে।