টি টুয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড। প্রথম দুই ম্যাচেই ২ – ০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলেছে বাংলাদেশ। হোয়াইট ওয়াশের লক্ষ্য নিয়ে আজ মাঠে নামে টাইগাররা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে লিটন দাস ও রনি তালুকদার। গত দুই ম্যাচে লিটনের ব্যাট হতে আগুন ঝড়লেও আজ ব্যর্থ হয়।
দ্বিতীয় ওভারে মার্ক আদিরের প্রথম বলেই জর্জ ডকরেলের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে লিটন দাস। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত নামে রনিকে সঙ্গ দিতে তবে তার ইনিংসও দীর্ঘস্থায়ী হতে দেয়নি হ্যারি টেক্টর। ৮ বলে ৪ রানের ইনিংস খেলে টেক্টরের বলে কার্টিস ক্যাম্পারের হাতবন্দি হয়ে ফিরে শান্ত।
পরের ওভারেই আরেক ওপেনার রনি তালুকদারকে ফেরায় কার্টিস ক্যাম্পার। ১০ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে রনি।
এরপর সাকিব আল হাসান ও তৌহিদ হৃদয় আশার আলো দেখালেই তাদের ইনিংসও দ্রুত শেষ হয়। ৫ম ওভারে মার্ক আদিরের বলে ৬ বলে ৬ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে সাকিব। পরের ওভারেই ১০ বলে ১২ রানের ইনিংস খেলে বেনজামিন হোয়াইটের শিকার হয় তৌহিদ হৃদয়। এরপর শামীম হোসেন পাটোয়ারি প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
তবে তাকে সঙ্গ দিতে পারেনি কেউ। রিশাদ হোসেন ৭ বলে ৮ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয়। শূন্য রানের ইনিংস নিয়ে সাজঘরে ফিরে তাসকিনও। এরপর নাসুম আহমেদ বেশ কিছুক্ষণ সঙ্গ দেয়। নাসুমকে সাজঘরে ফেরায় গ্রেরাথ ডিলানে। ১৭ বলে ১৩ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে নাসুম।
এক প্রান্তে নিয়মিত উইকেট পড়তে থাকলেও দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল শামীম। হাফ সেঞ্চুরিও করে ফেলে শামীম। অবশেষে শামীমকে থামাতে সক্ষম হয় ফিয়ন হ্যান্ড। ৪২ বলে ৫১ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে জর্জ ডকরেলের হাত ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে শামীম।
এতে ১৯.২ ওভারেই ১০ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের মোট সংগ্রহ দাঁড়ায় ১২৪ রান। আয়ারল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ টি উইকেট শিকার করে মার্ক আদির এবং দু’টি উইকেট শিকার করে ম্যাথিউ হামফ্রেস।
১২৫ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে আইরিশদের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে পল স্টিরলিং ও রস আদির। শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করে স্টিরলিং। বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম উইকেট শিকার করে তাসকিন আহমেদ। ৯ বলে ৭ রানের ইনিংস খেলে তাসকিনের বলে বোল্ড হয় রস আদির।
এরপর ৭ বলে ৪ রান করা লরকান টাকেরকেও তুলে নেয় শরিফুল ইসলাম। কিন্তু পল স্টিরলিং একাই টেনে নিয়ে যাচ্ছিল দলকে। হ্যারি টেক্টরকে সঙ্গে নিয়ে হাফ সেঞ্চুরি করে স্টিরলিং। এরপর আরও আগ্রাসী হয়ে যায়। অবশেষে স্টিরলিংকে থামাতে সক্ষম হয় রিশাদ হোসেন। ৪ ছক্কা ও ১০ চারে ৪১ বলে ৭৭ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে শান্তর হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে। তাকে ফিরালেও ততক্ষণে দেরী হয়ে গেছে।
১২ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ১০৯ রান। শেষ কাজটুকু করেছে হ্যারি টেক্টর ও কার্টিস ক্যাম্পার। ক্যাম্পারের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে দ্রুতই জয়ের দেখা পায় আয়ারল্যান্ড। ৬ ওভার বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে বিশাল জয় তুলে নেয় আয়ারল্যান্ড।
১৮ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল হ্যারি টেক্টর এবং ৯ বলে ১৬ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল কার্টিস ক্যাম্পার। বাংলাদেশের পক্ষে একটি করে উইকেট শিকার করে তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও রিশাদ হোসেন।
এতে ২ – ১ ব্যবধানে সিরিজে জয় পায় বাংলাদেশ। আজকের ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে পল স্টিরলিং। প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ হয়েছে তাসকিন আহমেদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ – ১২৪/১০ (১৯.২)
শামীম হোসেন পাটোয়ারি ৫১ (৪২)
রনি তালুকদার ১৪ (১০)
নাসুম আহমেদ ১৩ (১৭)
মার্ক আদির ৩ – ২৫ – ৪
ম্যাথিউ হামফ্রেস ২ – ১০ – ২
আয়ারল্যান্ড – ১২৬/৩ (১৪)
পল স্টিরলিং ৭৭ (৪১)
কার্টিস ক্যাম্পার ১৬ (৯)
হ্যারি টেক্টর ১৪ (১৮)
রিশাদ হোসেন ১ – ১৯ – ৩
শরিফুল ইসলাম ১ – ২৫ – ২