এশিয়া কাপ মিশন

নিয়মরক্ষার শেষ ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে জয় দিয়ে এশিয়া কাপ মিশন শেষ করলো বাংলাদেশ!

সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে কলম্বোতে মুখোমুখি হয় ভারত ও বাংলাদেশ। প্রথম ২ ম্যাচ জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করা ভারত ও প্রথম ২ ম্যাচ হেরে বিদায় নিশ্চিত হওয়া বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচ ছিল শুধুমাত্র নিয়মরক্ষার। তাই, উভয় দলেই ছিল একাধিক পরিবর্তন।

ভারতের একাদশে ছিলেননা বিরাট কোহলি, হার্দিক পান্ডিয়া, জসপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ ও কুলদীপ যাদব। তাদের পরিবর্তে জায়গা পান সূর্যকুমার যাদব, শার্দূল ঠাকুর, মোহাম্মদ শামি, প্রসিধ কৃষ্ণা ও নতুন অভিষেক হওয়া তিলক ভার্মা। 

অন্যদিকে, বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয় পেসার তানজিম হাসান সাকিবের। দলে আরও জায়গা পান এনামুল হক বিজয়, তানজিদ হাসান তামিম, মুস্তাফিজুর রহমান ও শেখ মাহেদি।

বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, লিটন কুমার দাস, এনামুল হক বিজয়, মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মাহেদী, তাওহীদ হৃদয়, শামীম পাটোয়ারী, নাসুম আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব, মুস্তাফিজুর রহমান।

ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুভমান গিল, তিলক ভার্মা, লোকেশ রাহুল, ইশান কিশান, সূর্যকুমার যাদব, রবিন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, শার্দূল ঠাকুর, মোহাম্মদ শামি, প্রসিধ কৃষ্ণা।

ম্যাচের ১ম ইনিংস

ভারতের বিপক্ষে ওপেনিংয়ের শুরুটা করেন লিটন ও তরুণ তানজিদ তামিম। গ্রুপ পর্বের ১ম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে ব্যর্থ হওয়ার পর আসরে নিজের ২য় সুযোগ পাওয়া জুনিয়র তামিম ভালো শুরুর আভাস দেন।

তবে এই ম্যাচেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তামিমের সঙ্গী লিটন দাস। কোনো রান না করেই আউট হন লিটন। এরপর তামিমও আর বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি। ৩ চারের ইনিংসে ১৩ রান করে শার্দূল ঠাকুরের কাছে বোল্ড আউট হন তরুণ ব্যাটার। 

এনামুল হক বিজয়ও ৪ রান করে ফিরেন দ্রুতই। এরপর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। দেখেশুনে দলের রানের চাকা সচল রাখেন টাইগার ক্যাপ্টেন৷ এসময় সাকিবকে সঙ্গ দেন মিরাজ। মিরাজ ১৩ রান করে সাজ ঘরে ফিরলেও ঠিকই হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন সাকিব।

তাওহীদ হৃদয়কে সাথে নিয়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তিনি। অবশেষে, ৮০ রান করে থামেন এই অলরাউন্ডার। সাকিবের যাওয়ার পরপরই তার পরিবর্তে ক্রিসে আশা শামীমও আউট হন মাত্র ১ রান করে। 

এরপর নাসুম আহমেদকে সাথে নিয়ে ফিফটি তুলে নেন হৃদয়। ৫৪ রানে হৃদয় আউট হলেও নাসুম আহমেদের ৪৪ ও শেখ মাহেদীর ২৯ রানের ক্যামিও ইনিংসের উপর ভর করে ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৫ রানের ভালো সংগ্রহ পায় টাইগাররা। 

ম্যাচের ২য় ইনিংস

২৬৬ রানের টার্গেট তাড়া করতে নামা ভারতের ওপেনিংয়ের শুরুতেই জোড়া আঘাত আনেন অভিষিক্ত পেসার তানজিম হাসান সাকিব। নিজের ১ম ওভারেই ফেরান অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে। একইভাবে তানজিম সাকিবের ২য় শিকারে পরিণত হন ভারতের হয়ে অভিষেক হওয়া তিলক ভার্মাও। 

তবে শুভমান গিলের রানের চাকা ঘুরতে থাকে নিয়মিতভাবে। লোকেশ রাহুল তাকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিলেও টিকে থাকতে পারেননি বেশি সময় ধরে। একপ্রান্তে ভারত নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকলেও শুভমান গিল নিজের অর্ধ শতক পূরণ করেন। 

ইশান কিশান, সূর্যকুমার যাদব ও রবিন্দ্র জাদেজা আউট হলেও অক্ষর প্যাটেলকে সাথে নিয়ে দলের জয়ের আশা ছাড়েননি শুভমান। ওয়ানডেতে নিজের ক্যারিয়ারের ৫ম শতক তুলে অবশেষে ১২১ রানে থামেন এই তরুণ ওপেনার। 

তবে, গিলের আউটের পর দলের হয়ে শেষ ভরসা হিসেবে মাঠে ছিলেন অলরাউন্ডার অক্ষর প্যাটেল ও শার্দূল ঠাকুর। শেষ ২ ওভারে ভারতের জয়ে জন্য প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। ৪৯তম ওভারে মুস্তাফিজের জোড়া আঘাতে এই দুইজনই আউট হলে জয় নিশ্চিত হয় টাইগারদের। 

শেষ ওভারে মোহাম্মদ শামি রান আউট হলে ২৫৯ রানে অলআউট হয় ভারত। ফলে, সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে এসে একমাত্র জয়ের দেখা পায় চান্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। ব্যাট হাতে ৮০ রান ও বল হাতে ১ উইকেট নিয়ে হয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

ম্যাচ স্কোরবোর্ড (Match Scoreboard)

বাংলাদেশ ২৬৫/৮ (৫০ ওভার)

সাকিব আল হাসান – ৮০ (৮৫)

শার্দূল ঠাকুর – ৩/৬৫ (১০ ওভার)

ভারত ২৫৯/১০ (৪৯.৫ ওভার)

শুভমান গিল – ১২১ (১৩৩)

মুস্তাফিজুর রহমান – ৩/৫০ (৮ ওভার)

ম্যাচ সেরা: সাকিব আল হাসান

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top