বিপিএলের দশম আসরের সিলেট পর্বের শেষ দিনেও অনুষ্ঠিত হয় ২টি ম্যাচ। দিনের প্রথম ম্যাচে টানা পঞ্চম জয়ের লক্ষ্যে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে মাঠে নামে খুলনা টাইগার্স। যেখানে, সন্ধ্যার খেলায় মুখোমুখি হয় সিলেট স্ট্রাইকার্স ও রংপুর রাইডার্স।
খুলনার হারে আসরে তৃতীয় জয় বরিশালের!
টসে হেরে ব্যাটিং করতে নামা খুলনা শুরুতেই পড়ে বিপাকে। অধিনায়ক এনামুল হক ফিরেন মাত্র ১২ রান করে। পাওয়ার প্লে’তে খুলনা হারায় আরও ১ উইকেট। ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন দলের ব্যাটিং সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন৷ কিন্তু, তিনিও ৩৩ রান করে ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এরপর, আফিফ হোসেন, মাহমুদুল হাসান জয়, দাসুন শানাকা, নাহিদুল ইসলাম কেউই ভালো কিছু করতে পারেননি। টাইগার্সদের হয়ে ব্যাটিংয়ে হাল ধরেন দুই পাকিস্তানি অলরাউন্ডার।
মোহাম্মদ নওয়াজ ও ফাহিম আশরাফ দলকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লক্ষ্য এনে দিতে ভালোভাবে খেলা চালিয়ে যান। ইনিংসের শেষ ওভারে ফাহিম আশরাফ মাত্র ১৩ বলে ৩২ রানের ক্যামিও ইনিংসে খেলে আউট হন।
২৩ বলে ৩৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে খেলা মোহাম্মদ নওয়াজ ছিলেন দলের হয়ে অপরাজিত। ফলে, দুই পাকিস্তানির কল্যাণে ১৫৫ রানের মাঝারি পুঁজি পায় খুলনা।
১৫৬ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে বরিশালের ওপেনার আহমেদ শেহজাদ প্যাভিলিয়নে ফিরেন কোনো রান না করেই। অধিনায়ক তামিম ইকবাল করেন মাত্র ২০ রান৷
সৌম্য সরকার ২৬, মুশফিকুর রহিম ২৭ করলেও সিলেটের বিপক্ষে দলকে জেতানো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এই ম্যাচে দলের হয়ে কোনো অবদান রাখতে ব্যর্থ হন।
বরিশালের দুই অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক এবং মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটিং নৈপুণ্যে ম্যাচ জয় করে দলটি। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৮ রান প্রয়োজন হলে শোয়েব মালিকের ২ ছক্কা ও ১ চারে দুই বল হাতে রেখেই খুলনাকে ৫ উইকেটে হারায় ফরচুন বরিশাল।
বরিশালের এই জয়ের ফলে পঞ্চম ম্যাচে এসে আসরে প্রথম হারের মুখ দেখলো টাইগার্সরা। বরিশালের হয়ে বল হাতে ২ উইকেট শিকার ও ব্যাট হাতে ২৫ বলে ৪১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা শোয়েব মালিক হন ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ।
১ জয়ের পর রংপুরের বিপক্ষে বড় হারে আবারও সেই হারের বৃত্তে সিলেট!
টসে জিতে বোলিং করতে নামা সিলেটের বোলাররা রংপুরকে ভালোই বিপদে ফেলে। ওপেনিংয়ে ১ রান করে আরও একবার হতাশা উপহার দেন ব্র্যান্ডন কিং।
তবে, কিংয়ের ওপেনিং সঙ্গী বাবর বরাবরের মতো এই ম্যাচেও নিজের জাত চেনান। ৯ম ওভারে টেক্টরের জোড়া আঘাতে ফজলে মাহমুদ রাব্বি ও সাকিব আল হাসান ফিরলেও ক্রিসে ঠিকে ছিলেন এই পাকিস্তানি ব্যাটার।
হাফ সেঞ্চুরির আশা দেখালেও শেষ পর্যন্ত ৪৭ রানে আউট হন তিনি। বাবরের পরপরই ২২ রানের ক্যমিওতে আরিফুল হকের শিকার হন আজমাতউল্লাহ ওমারজাই।
অপরপ্রান্তে ঠিকই দলের স্কোরবোর্ডকে সচল রাখেন অধিনায়ক সোহান। তবে, বাবর আজমের দেখাদেখি তিনিও অর্ধ শতক পূরণ না করে সাজ ঘরে ফিরেন।
শেষে, মোহাম্মদ নবি ও শামীম পাটোয়ারীর ১৬ রানের জুটিতে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রান সংগ্রহ করে রংপুর রাইডার্স।
১৬৮ রানের লক্ষ্যে জবাব দিতে নেমে রীতিমতো প্যাভিলিয়নে ফেরার তাড়ায় ছিলেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের ব্যাটররা। পাওয়ার প্লে’র প্রথম ৬ ওভারেই ২৪ রান সংগ্রহে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিক দলটি।
রংপুরের বোলিং তোপে একে একে ধরাশায়ী হতে থাকে সিলেটের ব্যাটাররা। এক সামিত পাটেল ছাড়া ২ অঙ্কের রানের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি সিলেটের প্রথম ৬ ব্যাটারের কেউই।
সিলেটের হয়ে শেষ ভরসা হিসেবে আশা বাঁচিয়ে রাখেন জিম্বাবুয়েন রায়ান বার্ল। বার্ল একপাশ আগলে রাখলেও অপরপাশে ঠিকই আশা যাওয়ার মিছিলে নাম লেখাতে থাকেন আরিফুল হক, নাঈম হাসান ও রেজাউর রহমান রাজারা।
শেষ পর্যন্ত, ১৭তম ওভারে মোহাম্মদ নবির জোড়া আঘাতে দুই বিদেশি রায়ান বার্ল ও রিচার্ড এন্গ্রাভা ফিরলে মাত্র ৮৫ রানে অলআউট হয় রাজিন সালেহর শিষ্যরা।
৭৭ রানে জয়ের ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান।