বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের গ্রুপ পর্বের খেলা প্রায় শেষ। সেমি ফাইনালে কোন চারদল খেলবে সেটাও প্রায় নিশ্চিত। আজ ৩৬তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল নক আউট পর্ব নিশ্চিত হওয়া সিলেট স্ট্রাইকার্স ও রংপুর রাইডার্স।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় রংপুর রাইডার্স। সিলেটের পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে আসে তৌহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনে মিলে অসাধারণ শুরু করে।
শান্তর ব্যাট থেকে তেমন রান না আসলেও এগিয়ে নিচ্ছিল তৌহিদ হৃদয়। অবশেষে শান্তকে সাজঘরে ফেরাতে সক্ষম হয় হাসান মাহমুদ। ২২ বলে ১৫ রানের স্লো ইনিংস খেলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেয় নাজমুল হোসেন শান্ত।
নাজমুলের পর হৃদয়কে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে জাকির হাসান। তবে তার ইনিংস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ৭ বলে ৭ রানের ইনিংস খেলে মেহেদী হাসানের বলে অ্যারন জোনসের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে জাকির হাসান। দশ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে সিলেটের সংগ্রহ তখন মাত্র ৫৯ রান।
এরপর মাঠে আসে মুশফিকুর রহিম। মুশফিক মাঠে আসার পরেই বদলাতে শুরু করে স্কোরবোর্ড। দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকে মুশফিক। এতক্ষণ ধীর গতিতে খেলতে থাকা তৌহিদ হৃদয়ও যোগ দেয় মুশফিকের সাথে। দুজনের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দিশেহারা হয়ে যায় রংপুরের বোলাররা। শীঘ্রই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয় তৌহিদ হৃদয়। এরপর আরও আগ্রাসী হয়ে খেলতে শুরু করে হৃদয়। হৃদয়ের পর হাফ সেঞ্চুরি তুলতে দেরী করে মুশফিকও। চার ছক্কায় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয় মুশফিক।
তৌহিদ হৃদয় ও মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্সের সংগ্রহ দাড়ায় ১৭০ রান। ১৩ চার ও ২ ছক্কায় ৫৭ বলে ৮৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল তৌহিদ হৃদয়। অপর প্রান্তে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৫ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল মুশফিকুর রহিম। রংপুরের পক্ষে একটি করে উইকেট শিকার করে মেহেদী হাসান ও হাসান মাহমুদ।
১৭১ রানের লক্ষ্যে তাড়া করে রংপুরের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে মোহাম্মদ নাঈম ও রনি তালুকদার। ইনিংসের প্রথম থেকে দু’জনেই আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করে। অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে আসা থিসারা পেরেরার এক ওভারেই ১৯ রান তুলে নিয়ে ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে রনি তালুকদার। রনির ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বেশ অনেকদূর এগিয়ে যায় রংপুর। মাত্র ৯ ওভারে দলীয় শত রানের সাথে শত রানের পার্টনারশিপ করে তারা দুজনে। তবে এরপর তাদের পার্টনারশিপ ভাঙতে সক্ষম হয় মোহাম্মদ ইরফান। ৮ টি চার ও ৩ টি ছক্কায় ৩৫ বলে ৬৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে মুশফিকুর রহিমের হাত বন্দি বিদায় নেয় রনি তালুকদার।
রনি বিদায় নিলে নাঈম কিছুক্ষণ দলকে টানলেও তার ইনিংসও আর বেশীক্ষণ স্থায়ী হতে দেয়নি রেজাউর রহমান রাজা। ১৩তম ওভারে বোলিংয়ে এসে ৩২ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলা মোহাম্মদ নাঈমকে সাজঘরে ফেরায় রাজা। এরপর ক্রিজে আসে শোয়েব মালিক ও নুরুল হাসান সোহান।
শোয়েব মালিক ধীরে সুস্থে শুরু করলেও আগ্রাসী ভুমিকায় ব্যাটিং শুরু করে। নুরুল হাসান সোহানও ভালো সঙ্গ দিয়ে গেছে। অবশেষে শোয়েব মালিকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২ ওভার বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রংপুর। এতে ১২ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটে বিশাল জয়লাভ করে রংপুর রাইডার্স। ১৭ বলে ১৭ বলে অপরাজিত ছিল সোহান। অপর প্রান্তে ২৪ বলে ৪১ রান করে অপরাজিত ছিল শোয়েব মালিক। সিলেটের পক্ষে একটি করে উইকেট শিকার করে মোহাম্মদ ইরফান ও রেজাউর রহমান রাজা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
সিলেট স্ট্রাইকার্স – ১৭০/২ (২০)
তৌহিদ হৃদয় ৮৫ (৫৭)
মুশফিকুর রহিম ৫৫ (৩৫)
নাজমুল হোসেন শান্ত ১৫ (২২)
মেহেদী হাসান ১ – ২০ – ৩
হাসান মাহমুদ ১ – ৪৮ – ৪
রংপুর রাইডার্স – ১৭৬/২ (১৮)
রনি তালুকদার ৬৬ (৩৫)
মোহাম্মদ নাঈম ৪৫ (৩২)
শোয়েব মালিক ৪১ (২৪)
রেজাউর রহমান রাজা ১ – ৩৫ – ৪
মোহাম্মদ ইরফান ১ – ৩৮ – ৪
ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন রনি তালুকদার।