বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসরের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয়েছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
মিরপুরের “হোম অব ক্রিকেট” খ্যাত শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক আফিফ হোসেন ধ্রুব।
সুস্থ হয়ে আবারও একাদশে ফেরা উইল জ্যাকস আজকেও দিচ্ছিলেন ভালো শুরুর ইঙ্গিত। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সাজঘরে ফিরতে হয় উইলকে। ৯ বল খেলে ২ টি চার ও ১ টি ছক্কা হাঁকিয়ে ১৬ রান করে সাজঘরে ফিরেন উইল জ্যাকস। উইলের পর চট্টগ্রামের অবস্থা বেশ শোচনীয় হয়ে যায়, ব্যাটিং খাপছাড়া হয়ে পড়ে।
একে একে সাজঘরে ৪ জন প্রথম সারির ব্যাটসম্যান। চ্যাডউইক ওয়ালটনন, জাকির হাসান, শামীম হোসেন পাটোয়ারি ও অধিনায়ক আফিফ হোসেন ধ্রুব। এদের মধ্যে কেবল ওপেনার জাকির ও অধিনায়ক দেুই অঙ্কের রানের দেখা পান। ১৯ বলে ২০ রান করেছেন জাকির এবং ১০ বল খেলে ১০ রান করেন অধিনায়ক আফিফ।
মাত্র ৫০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় চট্টগ্রাম। তখন মাত্র ৮ ওভার শেষ হয়েছে। দলের এই দুর্বিষহ সময়ে হাল ধরেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও আকবর আলী। ৬ষ্ট উইকেটে তারা ৬১ রানের পার্টনারশিপ করে দলকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যায়। আকবর আলী সাজঘরে ফিরলে ভাঙে পার্টনারশিপ। আউট হওয়ার আগে ২ টি করে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে ২০ বলে ৩৩ রান করে আকরব আলী।
আকরব আলীর পর মাঠে নামে বেবি হাওয়েল। কিন্তু মাত্র ৩ রানে করেই রান আউটের শিকার হয় হাওয়েল। অন্যপাশ থেকে সাপোর্ট না পেলেও একাই রান তুলছিলেন মিরাজ। একাই লড়াই চালিয়ে যান ১৯ ওভার পর্যন্ত। টানা বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে মিস করেন হাফ সেঞ্চুরি। ৩ টি চার ও ২ টি ছক্কায় ৩৮ বলে ৪৪ রান করে তালুবন্দি হন মিরাজ।
ক্রিকেটের আরও খবর…
মিরাজের ছক্কার আশা পূরণ করেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। মিরাজ আউট হওয়ার পরে টানা দুই বলে ছক্কা হাঁকান মৃত্যুঞ্জয়। তবে ২ ছক্কা মেরেই ক্ষান্ত হতে হয় তাকে। পরের বলেই সাজঘরে ফিরেন তিনি। অধিক রান দিলেও এক ওভারেই দুটি উইকেট তুলে নেন শহিদুল।
শেষ ওভারে মুস্তাফিজুর রহমান বলে আসেন। প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে আউট হন নাসুম আসমেদ। এতে ১৯.১ ওভারে ১৪৮ রানে শেষ হয় চট্টগ্রামের ইনিংস। কুমিল্লার পক্ষে ৩ টি করে উইকেট নিয়েছেন শহিদুল ও মঈন। মুস্তাফিজ পেয়েছেন মাত্র সর্বশেষ উইকেট।
১৪৯ রানের লক্ষ্যে নিয়ে মাঠে নামে কুমিল্লা। জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নেমে প্রথমেই লিটন দাসকে সাজঘরে ফিরতে হয়। লিটনের পর মাঠে নামে সুনীল নারাইন। নারাইন মপমেই তার ঝড় শুরু করেন। মাত্র ১৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে বিপিএল-এ দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন তিনি। ১৬ বল খেলে ৫৭ রান করে পাওয়ারপ্লেতেই সাজঘরে ফিরেন এই ঝড়ো ব্যাটসম্যান। ৫৭ রানের ইনিংসে নারাইন হাঁকান ৫ টি চার ও ৬ টি ছক্কা।
নারাইনের ঝড়ো ইনিংসে পাওয়ারপ্লেতেই কুমিল্লার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮৪ রানে। বিপিএলে পাওয়ারপ্লেতেই তে এটিই সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
নারাইনের পর ২৪ বলে ২২ রান করে বিদায় নেয় অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ফাফ ডু প্লেসি ও মঈন আলী দলকে নিয়ে যায় জয় পর্যন্ত। মারকুটে যাটিং করেই তারা জয় নিশ্চিত করে।
৪৯ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটে বিশাল জয় পায় কুমিল্লা। ১৩ বলে ২ টি চার ও ৩ টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৩০ রান করে অপরাজিত ছিলেন মঈন আলী। অপর প্রান্তে ২৩ বলে ৩০ রান করে অপরাজিত ছিল ফাফ ডু প্লেসি। বিপিএলের ইতিহাসে এমন দ্রুততম জয় খুব কমই দেখা গেছে।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস – চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স – ১৪৮/১০ (১৯.১)
মেহেদী হাসান মিরাজ ৪৪ (৩৮), আকবর আলী ৩৩ (২০), জাকির হাসান ২০ (১৯)
মঈন আলী ২০/৩, শহিদুল ইসলাম ৩৩/৩, মুস্তাফিজুর রহমান ১৩/১
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স – ১৪৯/৩ (১২.৫)
সুনীল নারাইন ৫৭ (১৬), মঈন আলী* ৩০ (১৩), ফাফ ডু প্লেসি* ৩০ (২৩)
বেনি হাওয়েল ১১/১, শরিফুল ইসলাম ৩১/১, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ৩২/১
ফলাফল – কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়েছেন সুনীল নারাইন।