বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ। গত দুই ম্যাচে ১-১ জয় পেয়ে সিরিজে সমতায় ছিল। সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ ছিল।
প্রথমে টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। তাদের ব্যাট হাতে শুরুটা বেশ ঝলমলেই ছিল। দুই ওপেনার ইয়ানেমান মালান ও কুইন্টন ডি কক মারকুটে ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে উদ্বোধনী জুটিতে এনে দেয় ৪৬ রান। দলকে আশার আলো দেখানো ডি কককে সাজঘরে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্যের ছোঁয়া দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৮ বলের মোকাবিলায় মাত্র ১২ রান করে মিরাজে শিকারে পরিণত হন ডি কক।
মিরাজের পর দলকে উইকেট এনে দেয় তাসকিন আহমেদ। ইয়ানেমান ও কাইল ভেরেইন্নের জোড়া উইকেট তুলে নেয় তাসকিন। মুশফিকের তালুবন্দি হওয়ার আগে ইয়ানেমানের ৫৬ বলের মোকাবিলায় সংগ্রহ ছিল ৩৯ রান। তাসকিনের জোড়া উইকেটে প্রোটিয়া ব্যাটিং লাইনে ধ্বসে পড়ে। দলীয় মাত্র ৭১ রানে যখন অধিনায়ক বাভুমাও সাজঘরে ফিরে তখন ম্যাচ অনেকটা বাংলাদেশের দখলে চলে আসে। মাত্র ২ রানে সাজঘরে ফিরে অধিনায়ক বাভুমা।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। পরের ছয়টি উইকেটের মধ্যে একটি রান আউট, শরিফুল ও সাকিব একটি করে উইকেট নেয়। বাকি ৪ টি উইকেটই শিকার করে তাসকিন। ডেভিল মিলার ৩১ বল খেলে করেন ১৬ রান, প্রিটোরিয়াস ও মহারাজ করেন যথাক্রমে ২০ ও ২৮ রান। বাকিদের কেউ দুই সংখ্যার স্কোর দেখেননি।
তাসকিনের বোলিংয়ে মাত্র ৩৭ ওভারে ১৫৪ রান করে অল-আউট হয় স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৩৯ রান করে ইয়ানেমান। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫ টি উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ। সর্বশেষ ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে কেউ ৫ টি উইকেট শিকার করেছিল। সেবার ৫ টি উইকেট নিয়েছিল লাসিথ মালিঙ্গা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই প্রথম কোন বাংলাদেশী বোলার ৫ টি উইকেট শিকার করলো। বাংলাদেশের তৃতীয় বোলার হিসেবে ক্যারিয়ারে একাধিক বার ৫ টি উইকেট শিকার করলো তাসকিন।
১৫৫ রানের টার্গেট নিয়ে মাঠে নামে টাইগাররা। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস অসাধারণ শুরু এনে দেয়। অধিনায়ক তামিম ইকবাল তার ৫২তম হাফ সেঞ্চুরি পূর্ন করে। তামিমের হাফ সেঞ্চুরির পর আস্তে ধীরে খেলতে থাকা লিটন দাসও অর্ধশতকের দিকে পা বাড়ান। তবে ২১ তম ওভারে ৪৮ রান করে বিদায় নেন তিনি। লিটনের সংগ্রহে ছিল ৮ টি চার। লিটনের উইকেটের পতনে ১২৭ রানের পার্টনারশিপ ভাঙে তামিম ও লিটনের। তাদের এই ১২৭ রানের পার্টনারশিপই দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সেরা পার্টনারশিপ।
লিটনের বিদায়ের পর আর কোন উইকেটের পতন ঘটেনি বাংলাদেশের। সেঞ্চুরি থেকে একটু দূরে থেকেই দলের জয় নিশ্চিত করে তামিম ইকবাল। ৮২ বলে ৮৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন তামিম। অপর প্রান্তে ২০ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত ছিল সাকিব আল হাসান। ৮৭ রানের ইনিংসে মোট ১৪ টি চার হাঁকিয়েছেন তামিম।
এই জয়ের মাধ্যমে দেশের বাইরে সপ্তম সিরিজ জয় পেল বাংলাদেশ। আর সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ৩০তম সিরিজ জয়।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস – দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকা – ১৫৪/১০ (৩৭)
ইয়ানেমান ৩৯ (৫৬), মহারাজ ২৮ (৩৯), প্রিটোরিয়াস ২০ (২৯)
তাসকিন ৫/৩৫, সাকিব ২/২৪
বাংলাদেশ – ১৫৬/১ (২৬.৩)
তামিম* ৮৭ (৮২), লিটন ৪৮ (৫৭), সাকিব* ১৮ (২০)
মহারাজ ১/৩৬
ফলাফল – বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী।