তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুটিতে জিতে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে জিম্বাবুয়ে। সিরিজ হেরে আজ হোয়াইটওয়াশ প্রতিহত করতে মাঠে নামে বাংলাদেশ।
গত দুই ম্যাচের মতো আজকেও টসে হারে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে বরাবরের মতো টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয় দুজনেই ধীরে সুস্থে খেলা শুরু করেন। এদিনও এনগারভার বলে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি টাইগার ওপেনাররা। তবে মাঝেমধ্যে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বলের সাথে রান এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন তামিম ও বিজয়। যদিও পাওয়ার প্লেতে অধিকাংশ বলই ডট খেলেছেন।
ভুল বোঝাবুঝির জন্য তামিম ইকবাল রান আউট হলে নবম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচেই হাফ সেঞ্চুরি করা তামিম ইকবাল এবারে ৩০ বলে ১৯ রান নিয়েই সাজঘরে ফিরেন। তামিমের পরে ক্রিজে আসে নাজমুল হোসেন শান্ত।
তবে মাঠে নেমেই ফিরতে হয়েছে শান্তকে। ব্র্যাড ইভান্সের বলে ওয়েসলি মাধেভেরের হাত বন্দি হয়ে ডাক মেরে সাজঘরে ফিরে শান্ত। একই ওভারে চতুর্থ বলে আরেকটি উইকেট নেয় ব্র্যাড ইভান্স। মাঠে নেমে দুটি বল খেলে তৃতীয় বলে এনগারাভার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় মুশফিকুর রহিমকে। শান্তর মতো মুশফিকও আউট হয়েছেন শূন্য রানে। নবম ওভারের পর আট বলে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
হোয়াইটওয়াশ থেকে রক্ষাঃ অল্প সময়ের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়ে চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন এনামুল হক বিজয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। রিয়াদ তেমন সুবিধা করতে না পারলেও ৪৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন বিজয়। অপরদিকে ধীর গতিতে খেলতে থাকা থাকা রিয়াদ প্রথম বাউন্ডারির দেখা পান ২৬তম বলে। রিয়াদের ব্যাটেই ২১তম ওভারে শত রানের দেখা পায় বাংলাদেশ।
হাফ সেঞ্চুরির পরে সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছিল বিজয়। লুক জয়উইয়ের বলে ব্যাটের কোনায় বল লেগে উইকেটরক্ষকের হাতে চলে গেলে সেঞ্চুরির স্বপ্ন ৭৬ রানেই থেকে যায় বিজয়ের। চারটি ছক্কা ও ছয়টি চারে ৭৩ বলে ৭৬ রান করে সাজঘরে ফিরে বিজয়।
বিজয় ফেরার পরে দলকে একাই টানতে থাকে আফিফ হোসেন। অপর প্রান্তে বলের সাথে রানের সামঞ্জস্য রাখতে হিমসিম খাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষ পর্যন্ত ৬৯ বলে ৩৯ রান করে রিচার্ড নাগারভার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে রিয়াদ। অপর প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকলেও হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন আফিফ হোসেন।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশর সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৫৬ রান। ৮১ বলে ৮৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন আফিফ হোসেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন লুক জংউই এবং ব্র্যাড ইভান্স।
২৫৭ রানের লক্ষ্যে নিয়ে মাঠে নামে জিম্বাবুয়ে। আগের দুই ম্যাচ তুলনা করলে তেমন বড় কোন টার্গেট নয় জিম্বাবুয়ের জন্য। প্রথম ওভারে বলে এসেই উইকেটের দেখা পান হাসান মাহমুদ।
হাসানের পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউ-এর শিকার হয়ে ৫ বলে শূন্য রান নিয়ে সাজঘরে ফুরে কাইতানো। পরের ওভারেই জিম্বাবুয়ে ব্যাটিং লাইনে আঘাত হানে মেহেদী হাসান মিরাজ। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে ১ রানে তাদিওয়ানশে মারুমানিকে তুলে নিলে দিশেহারা হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।
এরপর রানের গতি কমে গেলেও বেশ কিছুক্ষণ উইকেটের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। ষষ্ঠ ওভারে ওয়েসলি মাধেভেরেকে ফিরিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে উইকেট শিকারের অভিষেক করে এবাদত হোসেন। অভিষেক উইকেটের পরের বলেই জিম্বাবুয়ের হার্ড হিটার সিকান্দার রাজাকে গোল্ডেন ডাকে সাজঘরে ফেরায় এবাদত।
নবম ওভারে বলে আসেন তাইজুল ইসলাম। নিজের দ্বিতীয় বলেই এলবিডব্লিউ-এর শিকার করে তুলে সাজঘরে ফেরান ইনোসেন্ট কাইয়াকে। ২২ বল খেলে মাত্র ১০ রানে ফিরতে হয় কাইয়াকে। কাইয়া ফিরতে মাত্র ৩১ রানে পাঁচ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
১৮ বলে ১৩ রান করে স্ট্যাম্পিংয়ে টনি মুনিয়ঙ্গা সাজঘরে ফিরলে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন ক্লাইভ মাদানে ও লুক জংউই। তবে তাদের প্রতিরোধ গুড়িয়ে লুক জংউইকে তুলে নেয় মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজের বলে এনামুল হক বিজয়ের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে লুক জংউই। একইভাবে মাদেনেকেও তুলে নেয় মুস্তাফিজ। পুল করতে গিয়ে মুশফিকুর রহিমের হাত বন্দি হয়েছে মাদেনে।
এরপর ৯ বলে ২ রান করে মুস্তাফিজের শিকার হয়েছেন ব্র্যাড ইভান্স। মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ইভান্স। এতে ৩২.২ ওভারে ১৫১ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। দুটি করে উইকেট পেয়েছেন এবাত হোসেন ও তাইজুল ইসলাম।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ – ২৫৬/৯ (৫০)
আফিফ হোসেন ৮৫ (৮১)
এনামুল হক বিজয় ৭৬ (৭১)
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩৯ (৬৯)
লুক জখউই ২/৩৮
ব্র্যাড ইভান্স ২/৫৩
সিকান্দার রাজা ১/৪২
জিম্বাবুয়ে – ১৫১/১০ (৩২.২)
রিচার্ড নাগারাভা ৩৪ (২৭)
ভিক্টর নিয়ুচি ২৬ (৩১)
ক্লাইভ মাদানে ২৪ (৪৫)
মুস্তাফিজুর রহমান ৪/১৭
তাইজুল ইসলাম ২/৩৪
এবাদত হোসেন ২/৩৮
ফলাফল – বাংলাদেশ ১০৫ রানে জয়ী।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন আফিফ হোসেন।
২-১ ব্যাবধানে সিরিজে জয় পেয়েছে জিম্বাবুয়ে এবং ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছে সিকান্দার রাজা।