আফগানিস্থানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ

টি টুয়েন্টি সিরিজে প্রথম ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস জয় টাইগারদের!

ওয়ানডে সিরিজে ২ – ০ ব্যবধানে হারের পর আজ টি-টুয়েন্টিতে আফগানিস্থানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। 

আফগানিস্থানের পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে নামে হযরতউল্লাহ জাজাই ও রহমানউল্লাহ গুরবাজ। প্রথমে শুরুটা ভালোই করে আফগানরা। তবে ওপেনিং জুটিকে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেয়নি নাসুম আহমেদ। নাসুমের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে পরে একই বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ১০ বলে ৮ রানের ইনিংস নিয়ে সাজঘরে ফিরে হযরতউল্লাহ জাজাই।

পরের ওভারেই আরেক ওপেনার গুরবাজকেও সাজঘরে ফেরায় তাসকিন আহমেদ। ১১ বলে ১৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে গুরবাজ। 

দুই ওপেনার ফিরলে ক্রিজে আসে ইব্রাহিম জাদরান ও করিম জানাত। তাদের ইনিংসও লম্বা হয়নি। ৫ম ওভারে শরিফুল ইসলামের বলে লিটনের হাত বন্দি হয়ে ৮ রানের সংগ্রহ নিয়ে সাজঘরে ফিরে জাদরান। এরপর করিম জানাত ৯ বলে ৩ রানের ইনিংস খেলে সাকিব আল হাসানের বলে শান্তর হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে।

এরপর দলের হাল ধরে মোহাম্মদ নবী ও নাজিবুল্লাহ জাদরান। দুজনের অসাধারণ জুটিতে দ্রুত রান এগোতে থাকে আফগানিস্থানের। অবশেষে তাদের জুটি ভাঙে মেহেদী হাসান মিরাজ। ২৩ বলে ২৩ রানের ইনিংস খেলে মিরাজের বলে লিটনের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে নাজিবুল্লাহ জাদরান। 

এরপর নবীকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ওমরজাই এসেই দ্রুত রান তুলতে শুরু করে। অবশেষে তাকে থামাতে সক্ষম হয় সাকিব। ১৮ বলে ৩৩ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে তাসকিনের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে ওমরজাই। এরপর অধিনায়ক রশিদ খান মাত্র ৩ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে। 

নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে আফগানিস্থানের সংগ্রহ ছিল ১৫৪ রান। ৪০ বলে ৫৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল মোহাম্মদ নবী। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ দু’টি উইকেট শিকার করে সাকিব আল হাসান। বাকি সকলে একটি করে উইকেট শিকার করে। 

১৫৫ রানের লক্ষ্যে তাড়া করে করতে বাংলাদেশের পক্ষে মাঠে নামে লিটন দাস ও রনি তালুকদার। তবে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ওভারেই ৪ রান করে ফাজালহক ফারুকীর বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে রনি তালুকদার। এরপর ক্রিজে আসে নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্তর ইনিংসও বড় হতে দেয়নি মুজিবুর রহমান।

১২ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে শান্ত। এরপরের ওভারেই লিটনকেও তুলে নেয় আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ১৯ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলে রশিদ খানের হাত বন্দি হয়ে ফিরে লিটন। 

মাত্র ৩৯ রানে ৩ উইকেট হারালে দলের হাল ধরে সাকিব আল হাসান ও তৌহিদ হৃদয়। তাদের অসাধারণ জুটিতে রান এগোতে শুরু করে। কিন্তু জুটি দীর্ঘস্থায়ী হতে দেয়নি ফরিদ আহমেদ।

১৭ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলে ফরিদের বলে করিম জানাতের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে সাকিব আল হাসান। এরপর তৌহিদ হৃদয়কে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসে শামীম হোসেন পাটোয়ারী। তাদের অসাধারণ জুটিতে ভর করে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে আউট হয় শামীম। এরপর মাঠে নামে মেহেদী হাসান মিরাজ। 

শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৬ রান। প্রথম বলেই চার হাঁকায় মেহেদী। দ্বিতীয় বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে ৬ বলে ৮ রানের ইনিংস খেলে। এরপর তাসকিন আহমেদ নামলে তাকেও শূন্য রানে সাজঘরে ফেরায় করিম জানাত।

পরবর্তী বলে নাসুমকেও তুলে নিয়ে হ্যাট্রিক করে করিম জানাত। তখনও বাংলাদেশ প্রয়োজন ২ রান। এরপর শরিফুল ইসলাম ক্রিজে এসেই চার হাঁকিয়ে ১ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয়। এতে ২ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ।

৩২ বলে ৪৭ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল তৌহিদ হৃদয়। আফগানিস্থানের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করে করিম জানাত। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে তৌহিদ হৃদয়। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর : 

আফগানিস্থান – ১৫৪/৭ (২০) 

মোহাম্মদ নবী ৫৪ (৪০) 

আজমতউল্লাহ ওমরজাই ৩৩ (১৮)

নাজিবুল্লাহ জাদরান ২৩ (২৩)

সাকিব আল হাসান ২ – ২৭ – ৪

মেহেদী হাসান মিরাজ ১ – ১৩ – ২

বাংলাদেশ – ১৫৭/৮ (১৯.৫)

তৌহিদ হৃদয় ৪৭ (৩২)

শামীম হোসেন পাটোয়ারী ৩৩ (২৫)

সাকিব আল হাসান ১৯ (১৭)

করিম জানাত ৩ – ১৫ – ১.৫

ফরিদ আহমেদ ১ – ১৭ – ২

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top