জরায়ু রোগ

জরায়ু রোগ সমূহ সম্পর্কে জানুন প্রয়োজনীয় তথ্য!

জরায়ু রোগ সমূহ : নারীদের জরায়ু অনেকসময় বিভিন্ন ভাইরাস আক্রান্ত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ত্রী যৌনাঙ্গের সঠিক পরিচর্যা না করলে প্রদাহজনিত ব্যথা ও যোনি থেকে রক্তপাত ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। এসব কারণে জরায়ু রোগ হয়।

তাই চলুন, জরায়ুর রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এর প্রতিকার সম্পর্কে সচেতন হই। 

জরায়ু রোগ সমূহ

জরায়ু রোগ কী?

ডিম্বনালীতে জীবাণুর সংক্রমণকে জরায়ু রোগ বলে। এর ফলে প্রজনন অঙ্গগুলোর জটিলতা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও গর্ভধারণ সংক্রান্ত সমস্যা এবং অন্যান্য সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে।

জরায়ু রোগ সমূহ চারটি ভয়ানক রোগ, এর লক্ষণ ও প্রতিকার 

জরায়ু রোগকে সাইলেন্ট কিলার বলা হয়। কারণ অনেক নারীই জরায়ু রোগের লক্ষণ বুঝতে পারেন না। তবে রোগ এর লক্ষণগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে দ্রত প্রতিরোধ করা সম্ভব। 

চলুন দেখে নিই জরায়ুর চারটি ভয়ানক রোগ এবং এর লক্ষণ ও প্রতিকার। 

টিউমার:

জরায়ু টিউমারের লক্ষণ : জরায়ুর টিউমার সাধারণত তিন ধরনের হয়। সাব সেরাস, ইন্ট্রা মুরাল এবং সাব মিউকাস। এর মধ্যে সাব মিউকাস টিউমারই সবচেয়ে বড় জটিলতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। গর্ভধারণের আগেই যদি টিউমার ধরা পড়ে, তাহলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

লক্ষণ

(১) ব্যথাযুক্ত ও অতিরিক্ত পরিমাণে রক্তস্রাব।

(২) মাসিক দীর্ঘস্থায়ী হওয়া।

(৩) তলপেট ফুলে যাওয়া।

(৪) মুত্রথলি ও অন্ত্রে চাপ।

(৫) সহবাসকালীন ব্যথা।

প্রতিকার 

অস্ত্রোপচার বা অপারেশনই হল টিউমারের প্রধান প্রতিকার। বর্তমানে জরায়ু টিউমারের চিকিৎসায় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে লেজার সার্জারি। এই পদ্ধতিতে রক্তপাতহীনভাবে লেজারের মাধ্যমে জরায়ু টিউমারের চিকিৎসা করা সম্ভব।

জরায়ু ক্যান্সার: 

নারীদের জরায়ুর মুখে যে ক্যান্সার হয়ে থাকে তাকে জরায়ু ক্যান্সার বলে। জরায়ুর ক্যান্সার সাধারণত ৩০ থেকে ৫৫ বছরের মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে। জরায়ু ক্যান্সার ধীরে ধীর বৃদ্ধি পায়। এই ক্যান্সার হতে প্রায় ১০-১২ বছর সময় লাগে। হরমোন কি? এর ভারসাম্যহীনতা,লক্ষণ সহ সমস্যা সমাধানের উপায় সমূহ!

লক্ষণ 

(১) যৌন সংগমের পর পরেই রক্তপাত।

(২) পেলভিক ব্যথা, যা মাসিকের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।

(৩) অস্বাভাবিক স্রাব, স্রাবে দুর্গন্ধ দেখা দেওয়া। 

(৪)  প্রস্রাব করা আর প্রস্রাব করার সময় ব্যথা অনুভব করা।

প্রতিরোধ 

১. অবিবাহিত মহিলাদের টিকা দিতে হবে। এর ফলে জরায়ু ক্যান্সার থেকে অনেকাংশ নিরাপদ থাকা যায়।

২. উপরোক্ত যেকোনো লক্ষণ চোখে পড়লেই। চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

৩. ১৮ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত নারীদের বছরে একবার করে হেল্থ চেকআপ করা উচিৎ। ফলে দেহে ক্যান্সার হওয়ার কোনো সম্ভবনা দেখা দিলে তা নিযুক্ত করা সম্ভব হবে। 

জরায়ুর সিস্ট

ডিম্বাশয়ের সিস্ট দেখা দিলে পানি ভর্তি বেলুনের মত এর ভিতর তরল পদার্থ থাকে। সিস্ট হলে তা চিহ্নিত করা খুবই কঠিন। বয়স বৃদ্ধি সাথে সিস্ট এর ঝুঁকি বেড়ে যায়।

লক্ষণ 

(১) তলপেটে চাপ, ফোলা এবং ব্যথা অনুভব করা।

(২) সিস্ট ফেটে গেলে হঠাৎ, তীব্র ব্যথা হতে পারে।

(৩) সিস্ট ডিম্বাশয় মোচড় দিতে পারে। যদি এটি ঘটে তাহলে তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হয়, এমনকি বমি ও হতে পারে।

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
প্রতিকার 
  • ইস্ট্রজেন নিয়ন্ত্রণ: 

ওভারিতে সিস্ট হওয়ার প্রধান কারণ ইস্ট্রজেন হরমোনের সাম্য নষ্ট হওয়া। ইস্ট্রজেনের পরিমাণ বেড়ে গেলে ওভিউলেশন অনিয়মিত হয়, যার ফলে ওভারিতে সিস্ট তৈরি হয়।

  • হার্বাল উপায়: 

বেশ কিছু হার্বাল উপায় সিস্টের সমস্যা থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। হার্বাল চিকিৎসার মাধ্যমে ড্যান্ডেলিয়ন, মিল্ক থিসল ইস্ট্রজেনের সঠিক মাত্রা বজায় রাখে। হামদর্দ এর ঔষধ সমূহ | কোন রোগে কোন ঔষধ কার্যকারি বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন!

  • ডায়েট: 

চিকিৎসকদের মতে, অনিয়মিত লাইফস্টাইল ওভারিয়ান সিস্টের অন্যতম কারণ। তাই নিয়মিত ডায়েট ও শরীরচর্চা এইসব রোগ থেকে দূরে রাখে। ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট একনজরে দেখে নিন!

জরায়ুর ইনফেকশন 

জরায়ু ইনফেকশন কেন হয় : কমবয়সী নারীদের বিশেষ করে যাদের বয়স ২০-৪০ বছর তাদের জরায়ু ইনফেকশন এর হার অনেক বেশি।  চিকিৎসাকদের ভাষায় একে পেলভিক ইনফ্লেমেটরি ডিজিজ বলা হয়।

লক্ষণ 

১. তলপেটে ব্যথা।

২. জ্বর।

৩. মাসিকের সময় অধিক রক্তস্রাব।

৪. দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব।

৫. পুঁজের মতো স্রাব।

৬. সহবাসে ব্যথা।

৭. মাসিক ছাড়া রক্তস্রাব।

প্রতিরোধ 

১. নিরাপদ যৌন সম্পর্ক।

২. যৌনসঙ্গম এর সময় কনডম ব্যবহার করা। 

৩. মাসিকের রাস্তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।

৪. সংক্রমিত হলে দ্রুত চিকিৎসকদের কাছে যাওয়া, এবং তাঁদের পরামর্শ নেওয়া। 

জরায়ুতে ব্যথার কারণ

মেয়েদের অনেকে তলপেট ও নিতম্বের ব্যথায় ভোগেন। মাসিক হওয়ার আগে তলপেটে ব্যথা শুরু হয়। মাসিক হওয়ার সময় এ ব্যথা প্রচন্ড বেড়ে যায়। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় যোনিতে ব্যথার সৃষ্টি হয়। এর কয়েকটি মূল কারণ রয়েছে:

১. জরায়ুর বৃদ্ধি

গর্ভাবস্থায় যোনিতে ব্যথার জরায়ু বৃদ্ধি একটি প্রধান কারণ। জরায়ু ভ্রূণের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করতে গিয়ে আকারে বৃদ্ধি পায়। এর ফলে এটি যোনি এবং আশেপাশের পেশীগুলির উপরে চাপ সৃষ্টি করে।

২. হরমোনের পরিবর্তন: 

গর্ভাবস্থায় নারীদেহে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে যৌন মিলনের সময় যোনিতে ব্যথা সৃষ্টি হয়।

৩. ভ্রূণের বৃদ্ধি: 

জরায়ুতে ভ্রূণের আকার বৃদ্ধির সাথে সাথে নিতম্বের লিগামেন্ট প্রসারিত হতে থাকে। লিগামেন্ট এবং পেশীর অত্যধিক প্রসারণের ফলে তীক্ষ্ণ যন্ত্রণা দেখা দেয়।

৪. জরায়ুর বিভাজন: 

জরায়ুর প্রসারণের ফলে যোনিতে ব্যথা হতে পারে। তবে, ব্যথা যদি তলপেটে হয় এবং ক্রমান্বয়ে বাড়তেন থাকে। তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।

ভিডিওঃ টিউমার ভালো করার ৭টি উপায় জেনে নিন।

শেষ কথা 

শরীরের যেকোনো সংক্রমণকে অবহেলা করা উচিৎ নয়। জরায়ু রোগ তো বটেই। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা অত্যন্ত জরুরি। 

আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top