স্পেন বনাম ক্রোয়েশিয়া

উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালে মুখোমুখি স্পেন বনাম ক্রোয়েশিয়া | ম্যাচ আপডেট!

উয়েফা নেশন্স লিগের তৃতীয় আসরের ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের রট্টারডেমের ফেয়েনুর্দ স্তাদিয়নে গতবারের রানার্সআপ স্পেনের মুখোমুখি হয় ক্রোয়েশিয়া। ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে হারিয়ে ফাইনালে উঠা স্পেন স্পষ্টতই শক্তিমত্তার বিচারে ফেভারিট ছিল এই ম্যাচে।

যেখানে নেদারল্যান্ডসকে ৪-২ গোলে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেওয়া ক্রোয়েশিয়া ছিল নিজেদের প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে।

স্পেনের বিপক্ষে ফাইনালে নিজের পছন্দের ৪-৩-৩ ফর্মেশনের পূর্ণ শক্তির দল মাঠে নামান ক্রোয়েট কোচ জালাতকো দালিচ। অন্যদিকে, ইঞ্জুরিতে থাকা পেদ্রি ও সার্জিও বুস্কেটস ছাড়া ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে দল সাজান স্পেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে।

নেশন্স লিগ জয়ে এই ম্যাচে স্পেন ফেভারিট হলেও ম্যাচ শুরুর প্রথম থেকে সমান তালে বল দখল ও আক্রমনে সোচ্চার ছিল ক্রোয়েশিয়ার এ্যাটাকার ও মিডফিল্ডাররা। অপরদিকে, স্পেনের হয়ে ১২ মিনিটে গাভির শট গোল সম্ভাবনা দেখালেও বল গোলপোস্টের বাইরে হওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি।

২৪ মিনিটে মারিও পাসালিচ এবং ৩১ ও ৩৯ মিনিটে ইভান পেরিসিচ স্পেনের জালে বল জড়াতে কিছু সুন্দর সুযোগ তৈরি করলেও প্রতিপক্ষ গোলকিপার উনাই সিমন বাঁধা হয়ে দাঁড়াই প্রতিবারই। ফলে, গোলশূন্য স্কোরলাইন নিয়ে শেষ হয় প্রথমার্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধে এসেও একই ছন্দে খেলতে থাকে উভয় দল। দুই দলেরই তৈরি করা ছোট ছোট সুযোগে ম্যাচ এগিয়ে গেলেও সুযোগ গুলোকে গোলে পরিণত করতে ব্যর্থ হয় তারা। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের কোনো সুযোগই কাজে লাগাতে না পারলে দ্বিতীয়ার্ধ শেষেও গোল বঞ্চিত থাকতে হয় দুই দলকে। ফলে, ম্যাচ নিষ্পত্তিতে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিটেও খেলা চলে একই নিয়মে। স্পেনের হয়ে দানি ওলমো, মার্কো এ্যাসেন্সিও ও রদ্রিরা একের পর এক চেষ্টা করলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। যেখানে, স্প্যানিশেদর মতো বারবার হতাশ হতে হয় নিকোলা ভ্লাসিচ, মার্সেলো ব্রোজোভিচ ও মাতেও কোভাসিচদেরও। অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিটেও কোনো দলই গোলের দেখা না পেলে ম্যাচ যায় ট্রাইব্রেকারে।

ট্রাইব্রেকারের প্রথম স্পটকিকে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে নিকোলা ভ্লাসিচ ও স্পেনের হয়ে হোসেলু গোলের সূচনা করেন। তাদের মতো একইভাবে সফল হন দুই দলের দুই মিডফিল্ডার মার্সেলো ব্রোজোভিচ ও রদ্রি। এরপর, ক্রোয়েশিয়ার হয়ে স্পটকিক নিতে আসেন দলের অধিনায়ক লুকা মদ্রিচ। কোনো ভুল ছাড়া দলকে ৩-২ এগিয়ে নেন দলের এই অভিজ্ঞ তারকা। 

স্পেনের হয়ে পেনাল্টি নিতে আসা মিকেল মেরিনোকে আটকাতে ব্যর্থ হন ক্রোয়েট গোলকিপার লিভাকোভিচ। ৩-৩ সমতায় থাকা পেনাল্টিতে এরপরই ক্রোয়েশিয়ার হয়ে বিপত্তি ঘটান লোভরো মায়ের। তার নেওয়া শট সেভ করে স্প্যানিশদের উল্লাসে ভাসান গোলকিপার উনাই সিমন। তারপরে স্পেনের হয়ে গোল করতে ভুল করেননি মার্কো এ্যাসিন্সিও।

পঞ্চম পেনাল্টিতে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে ইভান পেরিসিচ গোল করতে সক্ষম হলেও স্পেনের হয়ে ব্যর্থ হন আইমারিক লাপোর্তা। ফলে, আবার স্কোর ৪-৪ সমতায় আসে। এরপর, ব্রুনো পেটকভিচের নেওয়া শটে পেনাল্টিতে নিজের দ্বিতীয় সেভ দেন উনাই সিমন।

যেখানে, স্পেনের হয়ে দানিয়েল কারভাহাল জালের দেখা পেলে ৫-৪ ব্যবধানে পেনাল্টিতে ম্যাচ জিতে নেয় সাবেক একবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। 

স্পেনের হয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর চতুর্থ ম্যাচেই এসে শিরোপার দেখা পেলেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে। উয়েফা নেশন্স লিগ জয়ের মধ্যে দিয়ে ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের পর দ্বিতীয় কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা ঘরে তুললো স্পেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top