আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের ওয়ান ডে সিরিজ মাঠে গড়িয়েছে আজ। এই সফরে আফগানিস্তান তিনটি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলবে।
‘সাগরিকা’ নামে খ্যাত চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের পক্ষে ওপেনিং এ নামে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান।
তবে তাদের জুটি খুব বেশীক্ষণ টিকতে দেয়নি মুস্তাফিজুর রহমান। মুস্তাফিজের বলে তামিমের হাতবন্দি হয়ে ৭ রানে সাজঘরে ফিরেন গুরবাজ। ইব্রাহিমও ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন কিন্তু লুফে নিতে ব্যর্থ হয় মাহমুদউল্লাহ্। তবে ইব্রাহিমও তার ইনিংস বড় করতে পারেননি। ২৩ বলে ১৯ রান করে শরিফুলের শিকারে পরিণত হন ইব্রাহিম। স্লিপে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন এই ওপেনার।
এরপর মাঠে নামেন অফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদী। তারা আস্তে ধীরে বলেন সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলছিলেন। কিন্তু ২৩ রানের পার্টনারশিপেই রহমতকে তুলে নেয় তাসকিন। লাফিয়ে উঠা বল ব্যাকফুটে ফেলতে গিয়ে কিপারের কাছে ক্যাচ তুলে দেয় রহমত। ৬৯ রানের মোকাবিলায় মাত্র ৩৪ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরেন রহমত।
৩ উইকেটের পতনে ৭৯ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। এরপর অধিনায়ক হাসমতউল্লাহও টিকতে পারেননি বেশীক্ষণ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৪৩ বলে ২৮ রান করে সাজঘরে ফিরেন। আফগানিস্তান রান আগাতে পারছিলো না। আফগানের এই অবস্থার জন্য সবচেয়ে বেশী ক্রেডিট মেহেদী হাসান মিরাজের প্রাপ্য।
মিরাজ কোন উইকেট না পেলেও ১০ ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ২৮। যার মধ্যে তিনটি মেডিন ছিল। রানের খরায় থাকা আফগানের হাল ধরেন জাদরান ও মোহাম্মদ নবি। দুজনে মিলে গড়েন ৬৩ রানের জুটি। এবারের জুটিও তাসকিনের হাতেই ভাঙে। ২৪ বলে ২০ রান করে তাসকিনের বলে সাজঘরে ফিরে নবি।
নবি ফিরলেও হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন জাদরান। হাফ সেঞ্চুরি করতে খেলেন ৭০ বল। জাদরান একাই দলকে টানছিলেন। তবে তাকে সঙ্গ দিতে পারেনি কেউ। ৪৫ তম ওভারে, এক ওভারেই দুটি উইকেট শিকার করেন সাকিব আল হাসান। ১৭ রানে গুলবেদিন নাইব ও শূন্য রানে রাশিদ খানকে সাজঘরে ফেরান সাকিব। সাকিবের পরের ওভারেই মুজিবুর রহমানকে তুলে নেয় মুস্তাফিজুর রহমান।
খেলাধুলার আরও খবর…
বাংলাদেশের বোলিং চাপে শেষপর্যন্ত ২১৫ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। যার মধ্যে জাদরেন ভূমিকাই ছিল বেশী। ৪ টি চার ও ২ টি ছক্কায় ৮৪ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলে এই ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ টি উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান। সাবিক, তাসকিন ও শরিফুল নেন দুইটি করে উইকেট।
মাত্র ২১৬ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে মাঠে নামে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের শুরুটাও আশানুরূপ হয়নি। ৫০ রান অতিক্রম হওয়ার আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তখন দলের হাল ধরেন আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। সপ্তম উইকেটে তারা বিশাল জুটি গড়েন। দুজনের ১৭৪ রানের বিশাল জুটিতে ৪ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ।
২১৬ রানের টার্গেটে নেমে ফজল হক ফারুকির বোলিং তোপে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস সাজঘরে ফেরেন। ফেরার আগে তামিম করেন ৮ রান ও লিটন করেন মাত্র ১ রান। ৩ ওভারের একটি মেডিন দিয়ে ৪ টি উইকেট তুলে নেন ফারুকি। তখন মাত্র ২১৬ রানের টার্গেটই অনেক বড় মনে হতে থাকে। মাত্র ১০ রানে সাকিব আল হাসান ও ফেরেন মুজিবুর রহমানের বলে। কাট করতে গিয়ে আউট হন এই অলরাউন্ডার। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও ৮ রান করে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন। সেখান থেকেই দলকে জয় পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায় আফিফ – মিরাজ জুটি।
দলকে এই তলানি থেকে তুলে জয় পর্যন্ত নিয়ে যেতে রেকর্ডও গড়ে ফেলেন আফিফ – মিরাজ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৮ সালে ১২৭ রানের জুটি দিয়ে সপ্তম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েছিলেন ইমরুল কায়েস ও সাইফউদ্দিন। আজকে সেটাকে দ্বিতীয় অবস্থানে নামিয়ে দেন মিরাজ ও আফিফ। শুধু তাই না, পুরো এশিয়ার মধ্যে সপ্তাহ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি। আফিফ ৯৩ ও মিরাজ ৮১ রানে অপরাজিত থেকে এই রেকর্ড গড়েন।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস – আফগানিস্তান
আফগানিস্তান – ২১৫/১০ (৪৯.১)
নাজিবউল্লাহ ৬৪ (৮৪), রহমত শাহ ৩৪ (৬৯), মুস্তাফিজ ৩/৩৫, শরিফুল ২/৩৮
বাংলাদেশ – ২১৯/৬ (৪৮.৫)
আফিফ* ৯৩ (১১৫), মিরাজ* ৮১ (১২০), ফারুকি ৪/৫৪ , রাশিদ খান ১/৩০
ফলাফল – বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী!