ই ক্যাপ খেলে কি হয়?

ই ক্যাপ খেলে কি হয়? জানুন অজানা সব তথ্য!

ই ক্যাপ খেলে কি হয় ? এ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই, কিন্তু ই ক্যাপ বা ক্যাপসুলের নাম আমরা কমবেশি সকলেই শুনেছি। ভিটামিন এ মানব দেহে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে।

তাই  আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো ই ক্যাপ খেলে কি হয় এবং ই ক্যাপ সম্পর্কে বিস্তারিত সব তথ্য।   

ই ক্যাপ মূলত ভিটামিন ই যুক্ত ক্যাপসুল। ই ক্যাপ এমন একটি সাপ্লিমেন্ট যা মানব দেহে ভিটামিন ই এর সকল চাহিদা পুরন করতে বিশেষ ভাবে সহায়তা করে। 

ভিটামিন ই এমন একটি পুষ্টি সম্পন্ন উপাদান যা মানুষের শরীরের কোষগুলিকে সক্রিয় রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। আমাদের শরীরে যখন ভিটামিন ই এর অভাব দেখা তখন ভিটামিন ই এর ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। চলুন তাহলে প্রথমেই জানা যাক ই ক্যাপ খেলে কি হয় ? 

ই ক্যাপ খেলে কি হয়? 

ই ক্যাপ ভিটামিন ই যুক্ত একটি ক্যাপসুল। ই ক্যাপ আমাদের দেশে বহু ব্যবহৃত এবং সব থেকে অধিক বিক্রয়কৃত একটি ক্যাপসুল। আমাদের শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ফলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। 

ই ক্যাপ খেলে শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি পূরণ হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ই ক্যাপ বা ক্যাপসুল এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং  হাড় ও পেশির দূর্বলতা দূর করে। গর্ভবতী মায়েদের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে ই ক্যাপ।

ই ক্যাপ বা ক্যাপসুল রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং পশমের রক্ত চলাচল ঠিক রাখে। চুলের গড়া মজবুত করতে এবং চুল পড়া রোধে ই ক্যাপ উপকারী। ই ক্যাপ ত্বকের নানা সমস্যা দূর করে ত্বক কে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে তোলে। 

এছাড়াও ই ক্যাপ খেলে বয়সের ছাপ দূর হয় এবং  তারুন্য বজায় রাখে। মোট কথা শরীরকে সুস্থ ও রোগ মুক্ত রাখতে শরীরের বিভিন্ন ঘাটতি জনিত সমস্যা গুলির সমাধান দেয় ই ক্যাপ।

ই ক্যাপ কখন খেতে হয়? 

ই ক্যাপ তিন প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন-

১.ই ক্যাপ ২০০ মি.গ্রাম 

২.ই ক্যাপ ৪০০মি.গ্রাম 

৩.ই ক্যাপ ৬০০মি.গ্রাম 

ই ক্যাপ পাওয়ার অনুযায়ী খেতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ই ক্যাপ ২০০ দুই বার সেবন করতে হবে সকাল ও রাতে যে কোন সময়। আর ই ক্যাপ ৪০০ অথবা ৬০০ সকালে কিংবা রাতে একবার করে খাবেন।

ই ক্যাপের উপকারিতা 

ই ক্যাপ বা ভিটামিন ই যুক্ত ক্যাপসুলের অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন-

১. রোগ প্রতিরোধে ই ক্যাপ

মানব দেহে ভিটামিন ই এর অভাবে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং বিভিন্ন রোগ ব্যাধি সৃষ্টি হয়। ই ক্যাপ বা ভিটামিন ই যুক্ত ক্যাপসুল খাওয়ার ফলে শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটতি পূরণ হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 

২. শরীরে ক্ষত বা ঘা সারতে 

শরীরের যে কোন ক্ষতস্থান দ্রুত শুকাতে ভিটামিন ই ভালো কাজ করে। শরীরের কোন জায়গা কেটে গেলে বা ক্ষত হলে নিয়মিত ভিটামিন ই ক্যাপ সেবন করুন এতে ক্ষত বা ঘা সেরে যাবে। 

৩. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ই ক্যাপ

ই ক্যাপ ত্বকের নানা সমস্যা দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ ই ক্যাপ এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। তাই ই ক্যাপ খেলে কিংবা বাহ্যিক ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বক সুরক্ষিত থাকে। 

৪. যৌন সমস্যার সমাধানে ই ক্যাপ

ভিটামিন ই যুক্ত ক্যাপসুল নারী পুরুষের যৌন সমস্যার সমাধানে বিশেষ ভাবে কার্যকর। ই ক্যাপ শারীরিক দুর্বলতা বা অক্ষমতা দূর করে শারীরিক মিলনের সময় দীর্ঘ করে থাকে। 

৫. তারুণ্য বজায় রাখতে 

বয়সের ছাপ দূর করতে ই ক্যাপ চমৎকার কাজ করে। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে চামড়া ঝুলে যাওয়া, কুঁচকে যাওয়া ত্বক, বলিরেখা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। ভিটামিন যুক্ত ই ক্যাপসুল তেলের সাথে মিশিয়ে ক্রিমের মতো ব্যবহার করুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের নানা সমস্যা দূর হবে এবং তারুণ্য বজায় রাখবে।

৬. চুলের যত্নে ই ক্যাপ

ই ক্যাপ বা ক্যাপসুল চুলের যত্নে বেশ উপকারী। কারণ ভিটামিন ই চুল পড়া বন্ধ করে, চুলের গোড়া মজবুত করে এবং নতুন চুল গজিয়ে চুল কে রেশমি ও ঝলমলে করে তোলে। 

৭. নখ মজবুত রাখে

অনেকেরই নখ ভেঙে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। ভিটামিন ই যুক্ত ক্যাপসুল নখের ভঙ্গুরতা দারুণ ভাবে রোধ করে। যারা এ সমস্যায় ভুগছেন তারা ভিটামিন ই ক্যাপসুলের তেল নখে মালিশ করুন এতে নখ মজবুত হবে এবং নখের ভঙ্গুরতা দূর হবে। 

৮. ময়েশ্চারাইজিং হিসেবে ই ক্যাপ

কর্ম ব্যস্ততার জীবনে আমাদেরকে বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকতে হয়। যার ফলে আমাদের ত্বক রোদে পুড়ে কালো হয়ে যায়। রোদে পোড়া দাগ দূর করতে ই ক্যাপ ভালো কাজ করে। ই ক্যাপ বা ক্যাপসুলের কয়েক ফোঁটা কুলিং ক্রিমের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করুন এতে রোদে পোড়া কালো দাগ দূর হয়ে যাবে। 

ই ক্যাপের অপকারিতা 

আমরা জানি যেকোন ঔষধের উপকারিতা এবং অপকারিতা দুটোই রয়েছে। পরিমাণের অধিক মাত্রায় সেবন করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। ভিটামিন ই ক্যাপ বা ক্যাপসুল সেবনে তেমন কোনো উল্লেখ যোগ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় না।

তবে ই ক্যাপ পরিমাণের চেয়ে বেশি মাত্রায় সেবন করলে এলার্জি এবং আমাশয় সহ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই যে কোন ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে সঠিক মাত্রায় সেবন করুন। 

শেষ কথা 

পরিশেষে বলা যায় ই ক্যাপ খেলে কি হয় এবং ই ক্যাপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আমরা জানতে পারলাম। যেহেতু ই ক্যাপ বা ভিটামিন ই ক্যাপসুল মানব দেহের জন্য পুষ্টিসম্পন্ন উপাদান তাই শরীরে ভিটামিন ই এর অভাব দেখা দিলে চিকিৎসকেরা ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ই ক্যাপ ভিটামিন ই এর ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি চুল পড়া রোধে এবং ত্বকের যত্নে কার্যকরী ভুমিকা রাখে। এছাড়াও ভিটামিন ই যৌন সমস্যার সমাধান করে থাকে। তবে ভালো ফলাফল পেতে চাইলে অন্তত দুই মাস ভিটামিন ই ক্যাপসুল নিয়মিত খেতে হবে। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top