ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম

ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম ও উপকারিতা জানুন!

পিঠাপুলির দেশ বাংলাদেশ। এদেশে যতরকম পিঠা বানানো হয় তার মধ্যে ভাপা পিঠা অন্যতম। ভাপা পিঠা ছাড়া শীতকাল যেন কল্পনায় করা যায় না। 

স্বাদে ও গন্ধে অনন্য এই পিঠা বানানোর রেওয়াজ যেন এখন বিলীন। তবে এখনো গ্রামেগঞ্জে ভাপা পিঠা বানানো হয়। শহরাঞ্চলের ফুটপাতে অচিরেই দেখা মিলে ভাপা পিঠার এক দোকানীর। 

এদেশের সংস্কৃতিতে যে পিঠার রয়েছে এত কদর, সেই ভাপা পিঠা সম্পর্কে না জানলে কী আর চলে? চলুন একনজর ঘুরে আসি ভাপা পিঠার জগতে। 

ভাপা পিঠা তৈরির সহজ রেসিপি ভিডিও তে দেখতে এখানে ক্লিক করুন!

ভাপা পিঠা বানানোর নিয়ম ও উপকারিতা

শীতের ভাপা পিঠা 

ভাপা পিঠা বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহ্যবাহী পিঠা। শীত আসলে দুই দেশেই ভাপা পিঠা বানানোর ধুম পড়ে। চালের গুড়া দিয়ে ভাপা পিঠা তৈরি করা হয়। জলীয় বাষ্পের আঁচে এই পিঠা তৈরি হয় বলেই এর নাম ভাপা পিঠা। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য চালের গুড়ার সাথে নারিকেলের শাঁস এবং খেজুরের গুড় মিশিয়ে অতিমিষ্ট এই পিঠা বানানো হয়। 

শীতের কুয়াশাঘেরা সকালে ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। যদিও সেই আনন্দ এখন শহুরে দালানকোঠার আড়ালে হারিয়ে গেছে। তবে নানির বাসায় সেই ভাপা পিঠা খাওয়ার সুখস্বৃতি এখনো অনেকের মনে জায়গা করে আছে। খেজুরের রস এর উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম জানুন!

ভাপা পিঠার উপকারিতা

চালের গুড়া ও খেজুরের গুড়ের সংমিশ্রণে অতি সু্স্বাদু ভাপা পিঠা অসংখ্য পুষ্টিগুণে ভরপুর। এছাড়াও নারিকেল ও দুধ দিয়ে এটি তৈরি করলে খেতে যেমন সুস্বাদু হয় তেমনি এটি শরীরের বিভিন্ন উপকার সাধন করে। 

ভাপা পিঠাই থাকা সকল পুষ্টিউপাদান আমাদের শরীরের জন্য বেশ দরকারি। আসুন তবে জেনে নিই ভাপা পিঠার উপকারিতাগুলি কী কী।  

  • ভাপায় পিঠায় থাকা চালের গুড়া আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও আয়রনের চাহিদা পূরণ করে। 
  • নারিকেলের গুড়ায় থাকে ক্যালরি, ফাইবার, চর্বি ও মিলিপানি। এসব উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অতীব প্রয়োজনীয়। 
  • ভাপা পিঠায় যথেষ্ট পরিমাণ নারিকেল থাকলে তা আমাদের শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ জিংক, খনিজ উপাদান, ম্যাগনেসিয়াম, ও ম্যাঙ্গানিজের যোগান দেয়। 
  • এছাড়াও ভাপাপিঠা ক্যালরির এক বিশেষ উৎস। তাই ভাপাপিঠা খেলে আপনার শরীরে ক্যালরির চাহিদা ভালোভাবে পূরণ হবে। 

ভাপা পিঠা রেসিপি

ভাপা পিঠা বানানো খুব সহজ। এটি বানানোর সমস্ত উপকরণ আপনি নিকটস্থ মুদির দোকানেই পেয়ে যাবেন। তাই শীত শেষ হবার আগেই ঘরে বসে বানিয়ে ফেলুন এই মজাদার পিঠা। 

উপকরণ 

  • চালের গুড়া (প্রয়োজন মতো)
  • খেজুরের গুড় (পরিমিত)
  • কোড়ানো নারিকেল
  • লবণ
  • পিঠা বানানোর জন্য নির্দিষ্ট বাটি
  • ছিদ্রযুক্ত ঢাকনা
  • পাতিল
  • বড় ছিদ্রযুক্ত প্লাস্টিকের ঝুড়ি

প্রণালী 

  • প্রথমে চালুনিতে করে চালের গুড়া ভালোভাবে চেলে নিন। 
  • এরপর চালের গুড়ার উপর হালকা পানি ছিটিয়ে দিন।
  • এবার লবণ দিয়ে হালকাভাবে মেখে নিন। নজর রাখবেন যেন দলা না হয়। 
  • এগুলো এবার বড় ছিদ্রযুক্ত প্লাস্টিকের ঝুড়িতে আবার চেলে নিন। 
  • এরপর পাতিলে পানি দিয়ে চুলার উপর বসান। এবং চুলা জ্বালিয়ে দিন। 
  • এবার ছিদ্রযুক্ত ঢাকনাটি পাতিলের উপর বসিয়ে দিন। 
  • একটা পরিষ্কার ন্যাকড়া দিয়ে পাতিলের চারপাশ ঢেকে দিন যেন বাতাস বেরোতে না পারে। 
  • এবার পিঠা বানানোর নির্দিষ্ট বাটিতে চালের গুড়া নিন এবং তার মাঝখানে পরিমাণমতো গুড় দিন। 
  • চারিপাশে নারিকেলের গুড়া ছিটিয়ে দিন। 
  • এবারে পাতলা একটা কাপড় দিয়ে হাড়ির মুখ ঢেকে দিন এবং পাতিলে রাখা ছিদ্রযুক্ত ঢাকনার উপর বাটিটি উলটে রাখুন। 
  • ২/৩ মিনিট চুলার উপর রেখে নামিয়ে নিন এবং উপভোগ করুন গরম গরম ভাপা পিঠা। 
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

উপসংহার 

ভাপা পিঠা স্বাদে যেমন অনন্য তেমনি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পিঠাগুলির মধ্যে ভাপা পিঠা অন্যতম। শীতের সকালে মিষ্টি রোদ্রে বসে ভাপা পিঠা খাওয়ার আনন্দই অন্যরকম। তবে এখন উঠোনের রোদ না পেলেও ঘরে বসে বানিয়ে ফেলতে পারেন সুস্বাদু এই পিঠা। 

ভাপা পিঠা বানানোর নিয়মাবলি তো উপরে দেওয়ায় রইলো। এছাড়াও আরো কিছু জানতে চাইলে প্রশ্ন করতে পারেন আমাদের কমেন্ট বক্সে। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top