মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা

মুড়ি খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা!

মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা আছে শুনে অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়? মুড়ি তো আমরা সবাই-ই খাই। তবে এর উপকারিতা আছে তা হয়তো অনেকেই জানি না। 

বাঙ্গালীদের পছন্দের একটি খাবার মুড়ি। মুড়িকে সুস্বাদু করতে এর সাথে চানাচুর, চপ, পিয়াজু, টমেটো, শশা ইত্যাদি মিশিয়ে মুখরোচক করা হয়। মুড়ি শুধু মুখরোচক ও সুস্বাদুই নয়, এর কিছু উপকারিতাও রয়েছে। চলুন জেনে নিই কী কী। 

মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

মুড়ি হালকা খাবার হিসেবে পরিচিত হলেও এর রয়েছে অনেক পুষ্টিগুন। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন, ক্যালসিয়াম, মিনারেল, প্রোটিন, ম্যাগনেসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট এবং ভিটামিন বি৬ সহ আরও অনেক খনিজ উপাদান। নিয়মিত মুড়ি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে অনেক উপকার হয়। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা কী কী। 

১. শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে 

মুড়ি শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করতে দারুণ কাজ করে। কারণ মুড়িতে যে শর্করা রয়েছে তা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজে শক্তি জুগিয়ে থাকে। এছাড়াও শরীরে অলসতা দেখা দিলে মুড়ি খাওয়া শুরু করুন। এতে অলসতা দূর হবে এবং কাজের শক্তি ফিরে পাবেন। 

২. ওজন নিয়ন্ত্রণে

ওজন কমাতে বা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে মুড়ি একটি আদর্শ খাবার। কারণ মুড়ি কম ক্যালরি যুক্ত যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে ফলে ক্ষুধার অনুভূতি থাকে না। তাই মুড়ি পেট ভরে খেলেও ওজন বৃদ্ধি পায় না বরং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীর সুস্থ থাকে। 

৩. রোগ প্রতিরোধ করে 

মুড়ি রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভুমিকা রাখে। মুড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি ও মিনারেল যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই রোগমুক্ত থাকতে এবং সুস্থ স্বাভাবিক জীবন পেতে মুড়ি খেতে পারেন। 

৪. হাড় মজবুত রাখে

মুড়ি আমাদের শরীরের হাড়কে মজবুত করে তোলে। মুড়িতে থাকা ফাইবার, ক্যালসিয়াম ও আয়রন হাড়কে মজবুত এবং শক্ত করতে সাহায্য করে। তাই হাড় মজবুত রাখতে নিয়মিত মুড়ি খান। 

৫. পেটের সমস্যা দূর করে

অনেকে পেটের নানা সমস্যায় ভুগে থাকেন। পেটের সমস্যা দূর করতে মুড়ি পানি দিয়ে ভিজিয়ে খান এতে উপকার পাবেন। মুড়ি ভেজানো পানি খেলে পেট ঠান্ডা হয় এবং পেটের নানা ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 

৬. দাঁতের সমস্যায়

দাঁত ও মাড়ির নানা সমস্যা দূর করে থাকে মুড়ি। মুড়ি চিবিয়ে খেতে হয় ফলে দাঁত ও মাড়ির একটি ব্যায়াম হয়। তাই নিয়মিত মুড়ি চিবিয়ে খেলে দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দূর হয়। 

৭. বদহজম দূর করে 

মুড়ি হজমের সমস্যা দূর করে থাকে। যাদের বদহজমের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য মুড়ি খুব উপকারী। তাই হজমের সমস্যা বা বদহজম দূর করতে নিয়মিত মুড়ি খান। 

৮. ঠান্ডা জনিত সমস্যায়

মুড়ি এন্টিঅক্সিডেন্ট সহ বিভিন্ন খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ। তাই নিয়মিত মুড়ি খেলে ঠান্ডাজনিত সমস্যা যেমন সাধারণ জর, সর্দি, কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 

৯. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা

মুড়ি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কারণ মুড়িতে সোডিয়াম থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। যারা ব্লাডপ্রেসার সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত মুড়ি খান এতে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 

১০. গ্যাস বা অম্বল দূর করতে 

পেটে গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা থাকলে মুড়ি খান। এক্ষেত্রে শুকনো মুড়ি চিবিয়ে এক গ্লাস পানি পান করুন এতে গ্যাস্ট্রিক সেরে যাবে। চিকিৎসকদের মতে, প্রতিদিন মুড়ি খেলে গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা দূর হয়। 

১১. মস্তিষ্কের উন্নতি করে 

মুড়িতে রয়েছে নিউরোট্রান্সমিটার পুষ্টিগুণ। এটি মস্তিষ্কের স্নায়ু উদ্দীপনা ও কগনেটিভ ফাংশনের উন্নতি সাধন করে। তাই প্রতিদিন মুড়ি খেলে মস্তিষ্কে নানা উপকারিতা পাওয়া যায়। 

মুড়ির ব্যবহার

বাঙ্গালীদের সান্ধ্যকালীন আড্ডায় মুড়ির প্রাধান্যই বেশি থাকে। বিশেষ করে রমজান মাসে মুড়ির ব্যবহার দেখা যায় বেশ। এসময় অনেকেই ছোলা ও বিভিন্ন ভাজা-পোড়ার সাথে মুড়ি মেখে খান। 

এছাড়াও আরো যেভাবে মুড়ি খাওয়া যায়:-

  • গুড় দিয়ে মুড়ি ভেজে তৈরি করা হয় মুড়ির মোয়া।
  • পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ এবং বিভিন্ন ধরনের মসলা দিয়ে তৈরি করা হয় ঝাল মুড়ি। 

শুকনো খাবারের মধ্যে মুড়ি উল্লেখযোগ্য। তাই বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলচ্ছাস ও অন্যান্য দূর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ শরনার্থীদের মুড়ি খেতে দেয়া হয়।

ভিডিওঃ “আনারস আর দুধ”একসাথে খেলে কী হয় যে বিপদ হতে পারে। ভুল ধারনা দূর করুন।

মুড়ির অপকারিতা 

বর্তমানে যে মুড়ি আমরা খায় তা ইউরিয়া মিশ্রিত যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও মুড়িতে লবনের পরিমাণ বেশি থাকে তাই যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে তাদের মুড়ি না খাওয়ায় উচিৎ। 

যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে বা হাইপার টেনশানের সমস্যা আছে তাদের মুড়ি খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়৷ আবার মুড়ি খেলে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। তাই যাদের ইউরিক এসিড আছে, তারা মুড়ি এড়িয়ে চলুন। 

এছাড়াও অতিরিক্ত মুড়ি খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ মুড়ির গ্লাইসিমাইক রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও মুড়ি কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ। তাই  বেশি মুড়ি খেলে ওজন বৃদ্ধি পায়। ফলে স্থুলতা হতে পারে। তাই পরিমাণমতো মুড়ি খেতে হবে। 

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

শেষ কথা 

চায়ের সাথে এক মুঠো মুড়ি কে না পছন্দ করে। মুড়ি এমন একটি খাবার যা বিভিন্ন মসলার সাথে মুখরোচক হয়ে ওঠে। যেহেতু অপকারের চেয়ে মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা বেশি, তাই অবসর সময়ে মুড়ি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। 

আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন!

1 thought on “মুড়ি খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা ও অপকারিতা!”

  1. আবুল বাসার

    একজন হার্ট অ্যাটাকের রোগীর মুড়ি খাওয়া চলে কিনা?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top