বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ৩৪তম ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয়েছিল ঢাকা ডমিনেটরস ও রংপুর রাইডার্স। মিরপুরে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় রংপুর রাইডার্স।
ঢাকার পক্ষে ওপেনিংয়ে ক্রিজে নামে মোহাম্মদ মিথুন ও সৌম্য সরকার। তবে শুরুটা ভালো হয়নি ঢাকার। প্রথম ওভারেই রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে মোহাম্মদ মিথুন। ২ বলে ৫ রান করে মিথুন ফিরলে সাবধানতার সাথে খেলতে শুরু করে সৌম্য। অপরদিকে মিথুনের পর মাঠে আসে অধিনায়ক নাসির হোসেন। এবারের বিপিএল-এ অসাধারণ ফর্মে থাকা নাসিরও আজকে দ্রুতই ফিরে। দ্বিতীয় ওভারে ৩ বলে ২ রান করে আজমতউল্লাহ ওমরাজাইয়ের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে।
সৌম্য সরকার সাবধানতার সাথে খেললেও খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। ১২ বলে ৩ রানের ইনিংস খেলে ফিরতে হয় সৌম্যকেও। এরপর আব্দুল্লাহ আল মামুন ও এলেক্স ব্লেক কিছুক্ষণ দলকে টানলেও তারাও খুব বেশীক্ষণ থাকতে পারেনি। অষ্টম ওভারে ১১ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলে হাসান মাহামুদের বলে শামীম হোসেনের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে। এরপর ২৭ বলে ২৩ রানের ইনিংস খেলে আল মামুন এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফিরলে ১০ ওভারে মাত্র ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারায় ঢাকা।
এরপর আরিফুল হক কিছুক্ষণ টিকে থাকলেও তেমন রান এগিয়ে নিতে পারেনি। ২৬ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলে ১৭তম ওভারে হারিস রউফের বলে আবারও ক্যাচ লুফে নিয়ে সাজঘরে ফেরায় এনামুল হককে। রংপুরের বোলিং তাণ্ডবে ঠিকমতো দাঁড়াতেই পারেনি ঢাকা ডমিনেটরস। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩০ রানের সংগ্রহ দাঁড়ায়। ১১ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল আমির হামজা। রংপুরের পক্ষে সর্বোচ্চ দু’টি উইকেট শিকার করে ওমরাজাই।
১৩১ রানের টার্গেট নিয়ে রংপুরের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে মোহাম্মদ নাঈম ও রনি তালুকদার। ঢাকার মতো রংপুরের শুরুটাও ভালো হয়নি। প্রথম ওভারে বলে এসে দ্বিতীয় বলেই মোহাম্মদ নাঈমকে তুলে নেয় শরিফুল ইসলাম। এরপর মেহেদী হাসান নামে রনিকে সঙ্গ দিতে। তবে মেহেদীর ইনিংসও দীর্ঘস্থায়ী হতে দেয়নি শরিফুল ইসলাম। তৃতীয় ওভারে আবারও বলে এসে প্রথম বলেই মেহেদীকে সাজঘরে ফেরায় শরিফুল।
এরপর তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলে রনি তালুকদার ও নুরুল হাসান সোহান। রনি তালুকদার দেখেশুনে খেললেও আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করে সোহান। শীঘ্রই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয় সোহান। দুজনের অসাধারণ পার্টনারশিপে দলীয় শত রান পূর্ণ হয় মাত্র ১২ ওভারে। অবশেষে তাদের পার্টনারশিপ ভাঙে নাসির হোসেন। ১৩তম ওভারে ৩৯ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে রনি তালুকদার।
রনির পরে নাসির হোসেনও বেশীক্ষণ টিকতে পারেনি। রনি আউট হওয়ার পরের ওভারেই প্রথম বলে শরিফুল ইসলামকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সৌম্য সরকারের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে। ৭ টি চার ও ৩ টি ছক্কায় ৩৩ বলে ৬১ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে নুরুল হাসান সোহান।
কিন্তু এরপরই উইকেট পতনের শুরু হয় রংপুরের। একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে রংপুর। ৫ বলে ৭ রান করে আউট হয় শোয়েব মালিক। মোহাম্মদ নওয়াজও মাত্র ১ রানে আউট হয়ে চাপে পড়ে যায় রংপুর। শামীম হোসেন ও রাকিবুল হাসানও দ্রুতই সাজঘরে ফিরে। অবশেষে শেষ ওভারে রংপুরকে জয় এনে দেয় হারিস রউফ।
অবশেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় রংপুর রাইডার্স। ৪ বলে ৭ রানের জয়ের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল হারিস রউফ। ঢাকা ডমিনেটরসের হয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট শিকার করে নাসির হোসেন এবং তিনটি উইকেট শিকার করে শরিফুল ইসলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ঢাকা ডমিনেটরস – ১৩০/৮ (২০)
আরিফুল হক ২৯ (২৬)
আব্দুল্লাহ আল মামুন ২৩ (২৭)
এলেক্স ব্লেক ১৮ (১১)
আজমতউল্লাহ ওমরাজাই ২ – ২২ – ৪
মোহাম্মদ নেওয়াজ ১ – ১১ – ১
রংপুর রাইডার্স – ১৩৩/৮ (১৯.৩)
নুরুল হাসান সোহান ৬১ (৩৩)
রনি তালুকদার ৩৪ (৩৯)
শামীম হোসেন ৮ (১১)
নাসির হোসেন ৪ – ২০ – ৪
শরিফুল ইসলাম ৩ – ১৮ – ৪
ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন নুরুল হাসান সোহান।