তৃতীয় ম্যাচে হার

বোলিং ও ফিল্ডিং বিপর্যয়ে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে হার বাংলাদেশের!

বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ। প্রথম দুই ম্যাচে জিতে ২-০ তে সিরিজ জিতে ছিল বাংলাদেশ। তাই তৃতীয় ম্যাচেও জয়ের ধারা ধরে রাখতে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নামে বাংলাদেশ। অপরদিকে হোয়াইট ওয়াশ ঠেকাতে মাঠে নামে ইন্ডিয়া। 

টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। রোহিত শর্মার ইনজুুরির কারণে না খেলায় ইন্ডিয়ার পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে শেখন ধাওয়ান ও ঈশান কিশান। শুরুটা আস্তে ধীরেই করে ইন্ডিয়া। পঞ্চম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় ইন্ডিয়া। ৮ বলে ৩ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে ধাওয়ান। 

এরপর মাঠে আসে বিরাট কোহলি। ঈশান কিশান ও বিরাট কোহলির ব্যাটিং তান্ডবে দিশেহারা হয়ে যায় বাংলাদেশ বোলাররা। কোনভাবেই তাদের আউট করতে সক্ষম হচ্ছিল না। সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পরে ডাবল সেঞ্চুরির দিকে যেতে থাকে ঈশান। অপর প্রান্তে কোহলিও তার সেঞ্চুরি তুলে ফেলে। তাদের পার্টনারশিপে বিধ্বস্ত হয়ে যায় বাংলাদেশ বোলাররা। সেঞ্চুরির পরে ডবল সেঞ্চুরিও পূর্ন করে ঈশান কিশান।

এরপর ৩৬তম ওভারে তাদের পার্টনারশিপ ভাঙতে সক্ষম হয় তাসকিন। তবে ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। ইন্ডিয়ার সংগ্রহ ৩০৫ রান। তারমধ্যে ঈশান ও কোহলির পার্টনারশিপই ২৯০ রানের। ২৪ টি চার ও ১০ টি ছক্কায় ১৩১ বলে ২১০ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে ঈশান কিশান। 

এরপর কোহলিকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে শ্রেয়াস। তবে তার ইনিংস দীর্ঘ স্থায়ী হয়নি। ৬ বলে ৩ রান করে এবাদত হোসেনের বলে লিটনের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে শ্রেয়াস। শ্রেয়াসের পরে মাঠে নামে অধিনায়ক কেএল রাহুল।

তবে সেও বেশীক্ষণ টিকতে পারেনি। ১০ বলে ৮ রান করে এবাদতের বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেয়। এরপর বিরাট কোহলিকে তুলে নেয় সাকিব আল হাসান। ২ টি ছক্কা ও ১১ টি চারে ৯১ বলে ১১৩ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে মেহেদী হাসান মিরাজের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে কোহলি।

এরপর ওয়াশিঙ্গটন সুন্দার ও আক্সেল পাটেল নেমেও ঝড়ো ব্যাটিংয়ে আরেকটু এগিয়ে নিয়ে যায় ইন্ডিয়াকে। ২৭ বলে ৩৭ রানের ইনিংস খেলে সুন্দার এবং ১৭ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলে পাটেল। 

এতে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ইন্ডিয়ার সংগ্রহ দাড়ায় ৪০৯ রান। বাংলাদেশের পক্ষে দু’টি করে উইকেট নেয় তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন ও সাকিব আল হাসান। 

৪১০ রানের বিশাল টার্গেট নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের পক্ষে নামে এনামুল হক বিজয় ও লিটন দাস। প্রথম থেকেই আগ্রাসী ভাবে খেলতে শুরু করে দুই ওপেনার।

তবে পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলে এনামুল হককে তুলে নেয় আক্সেল পাটেল। ৭ বলে ৮ রান করে সাজঘরে ফিরে বিজয়। লিটন দাস একটু আশার আলো দেখালেও ২৯ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলে মোহাম্মদ সিরাজের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে। 

মুশফিকুর রহিম পেছনে সুইপ শট খেলতে গিয়ে লেগ স্টাম্পে লেগে বোল্ড হয়। এরপর সাকিব আল হাসান ও ইয়াসির আলী কিছুক্ষণ টানলেও বেশিদূর নিতে পারেনি। ৩০ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফিরতে হয় ইয়াসির আলী।

এরপর সাকিবও শীঘ্রই বিদায় নেয়। ৫০ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে কুলদ্বীপের বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেয়। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও ২৬ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়। 

এরপর আর কেউ দাঁড়াতে পারেনি। শেষ উইকেটে মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ কিছুক্ষণ টিকে থাকলে কাজ হয়নি কোন। শেষ পর্যন্ত ৩৪ ওভারে ১০ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মোট সংগ্রহ করে ১৮২ রান। এতে ২২৭ রানের বিশাল জয় পায় ইন্ডিয়া। ইন্ডিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেয় সারদুল ঠাকুর। দু’টি করে উইকেট নেয় আক্সেল পাটেল ও উমরান মালিক। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর 

ইন্ডিয়া – ৪০৯ /৮ (৫০) 

ঈশান কিশান ২১০

বিরাট কোহলি ১১৩

ওয়াশিঙ্গটন সুন্দার ৩৭

সাকিব আল হাসান ২/৬৮

এবাদত হোসেন ২/৮০

তাসকিন আহমেদ ২/৮৯

বাংলাদেশ – ১৮২/১০ (৩৪)

সাকিব আল হাসান ৪৩

লিটন দাস ২৯

ইয়াসির আলী ২৫

সারদুল ঠাকুর ৩/৩০

আক্সেল পাটেল ২/২২

উমরান মালিক ২/৪৩

ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন ঈশান কিশান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top