বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়ে ১-০ তে এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ড। সিরিজে সমতা ফেরাতে মিরপুরে আজ মাঠে নামে টাইগাররা।
গত দিনের ন্যায় আজকেও টসে জিতলে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ইংল্যান্ডের পক্ষে ওপেনিংয়ে ক্রিজে আসে জ্যাসন রয় ও ফিলিপ সল্ট। শুরুটা তেমন আকর্ষণীয় ছিল না। আস্তে ধীরে রান এগোতে থাকে ইংল্যান্ডের।
বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম উইকেট পায় তাসকিন আহমেদ। সপ্তম ওভারে ১৫ বলে ৭ রানের ইনিংস খেলে শান্তর হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে ফিলিপ সল্ট। সল্ট ফিরলে রয়কে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে দাউদ মালান। গত দিনে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেও আজকে তেমন সুবিধা করতে পারেনি। ১৯ বলে ১১ রানের ইনিংস খেলে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে মালান।
এরপর জেমস ভিন্সের ইনিংসও দীর্ঘ হয়নি। ১৬ বলে ৫ রানের ধীর ইনিংস খেলে বিদায় নেয় ভিন্স। চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলে জ্যাসন রয় ও জস বাটলার। তাদের অসাধারণ পার্টনারশিপে দ্রুত রান এগোতে থাকে ইংল্যান্ডের।
দুজনে শত রানের জুটি করে এবং দলীয় রান দুইশততে নিয়ে যায়। অবশেষে তাদের জুটি ভাঙতে সক্ষম হয় সাকিব আল হাসান। ৩৬তম ওভারে বোলিংয়ে এসে রয়কে সাজঘরে ফেরায় সাকিব। ১২৪ বলে ১৩২ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে জ্যাসন রয়। তার পরের ওভারেই মাত্র ১ রানে সাজঘরে ফিরে উইল জ্যাকস।
জস বাটলারকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে মঈন আলী। হাফ সেঞ্চুরি সম্পূর্ণ করে ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করে জস বাটলার। অবশেষে তাকে থামায় মেহেদী হাসান মিরাজ। ৬৪ বলে ৭৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে মিরাজের বলে তার হাতেই ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে বাটলার। এরপর মঈন আলী ও স্যাম কুরানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দিশেহারা হয়ে যায় বাংলাদেশের বোলাররা।
৩৫ বলে ৪২ রানের সংগ্রহ নিয়ে তাসকিনের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে মঈন। শেষে স্যাম কুরানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩২৬ রান। ১৯ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল স্যাম কুরান। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করে তাসকিন আহমেদ এবং দু’টি উইকেট শিকার মেহেদী হাসান মিরাজ।
৩২৭ রানের বিশাল টার্গেট নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে মাঠে নামে তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। তবে বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম ওভারের ৪র্থ বলেই শূন্য রানের লিটনকে সাজঘরে ফেরায় স্যাম কুরান। এরপরের বলেই নাজমুল হোসেন শান্তকেও সাজঘরে ফেরায় স্যাম কুরান। মাত্র ১ রানে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর মুশফিকুর রহিম নেমে কিছুক্ষণ টিকলেও তার ইনিংসও বড় হয়নি। তৃতীয় ওভারে আবারও স্যাম কুরানের শিকার হয় মুশফিক। ৫ বলে ৪ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় মুশফিক।
চতুর্থ উইকেটে তামিম ও সাকিব আল হাসান প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আস্তে ধীরে দলকে এগিয়ে নিতে শুরু করে দুজনে। তবে তামিমকে দ্রুতই তুলে নেয় মঈন আলী। ৬৫ বলে ৩৫ রানের ধীর ইনিংস খেলে বিদায় নেয় তামিম ইকবাল। তামিম ফেরার পরে কিছুক্ষণ দলকে একাই টানে সাকিব। তবে ৬৯ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে আদিল রশিদের বলে স্যাম কুরানের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে সাকিব।
এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন দলের হাল ধরে। ৩৩ বলে ২৩ রানের ইনিংস খেলে রশিদের বলে বাটলারের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে আফিফ। আফিফ ফেরার পরে রিয়াদও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৪৯ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে রশিদের বলে মঈন আলীর হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে রিয়াদ।
মেহেদী হাসান মিরাজ ১৪ বলে ৭ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয়। তাসকিন কিছুক্ষণ টিকে থাকলেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। ২১ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় তাসকিন। তাসকিন আউট হওয়ার পরের বলেই জস বাটলারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে তাইজুল ইসলাম।
এতে ৪৪.৪ বলেই ১৯৪ রানে সকল উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এতে ১৩২ রানে বিশাল জয় পায় ইংল্যান্ড। প্রথম দুই ম্যাচেই সিরিজ নিশ্চিত করে তারা। ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ চারটি করে উইকেট শিকার করে স্যাম কুরান ও আদিল রশিদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড – ৩২৬/৭ (৫০)
জ্যাসন রয় ১৩২ (১২৪)
জস বাটলার ৭৬ (৬৪)
মঈন আলী ৪২ (৩৫)
তাসকিন আহমেদ ৩ – ৬৬ – ১০
মেহেদী হাসান মিরাজ ২ – ৭৩ – ১০
বাংলাদেশ – ১৯৪/১০ (৪৪.৪)
সাকিব আল হাসান ৫৮ (৬৯)
তামিম ইকবাল ৩৫ (৬৫)
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩২ (৪৯)
স্যাম কুরান ৪ – ২৯ – ৬.৪
আদিল রশিদ ৪ – ৪৫ – ১০
ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে স্যাম কুরান।