বেরিবেরি রোগ কি : বর্তমান সময়ে নানা ধরণের মরণব্যাধির প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। বেরিবেরি রোগ তার মধ্যে একটি। বেরিবেরি রোগ সাধারণত ভিটামিন বি১ বা থায়ামিনের অভাবে হয়ে থাকে। ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সী নারীদের মাঝে এই রোগ বেশি দেখা যায়।
চলুন দেখে নেওয়া যাক বেরিবেরি রোগ সম্পর্কে মূল্যবান কিছু তথ্য।
Table of Contents
বেরিবেরি রোগ কি
মূলত বেরিবেরি সাধারণত দেহের ঘাটতি রোগ হিসাবে পরিচিত। ভিটামিন বি১ মানবদেহের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান। পর্যাপ্ত থায়ামিন বা ভিটামিন বি১ দেহে সরবরাহ না হলে ধীরে ধীরে এই রোগ বিকশিত হয়।
বেরিবেরি রোগ এর মূল কারণ হচ্ছে ভিটামিন বি১ এর অভাব। তাছাড়াও পূর্বে ত্বকের কোনো জটিলতা থাকলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বেরিবেরি রোগ এর ৪টি প্রধান কারণ
খাদ্যে ভিটামিন বি১ এর ঘাটতির অভাবেই বেরিবেরি রোগ হয়। এছাড়াও বেরিবেরি রোগ হওয়ার বেশকিছু কারণ রয়েছে।
- প্রক্রিয়াকরণ থায়ামিন এবং ভিটামিনের ঘাটতির ফলে।
- অ্যালকোহল বেশি পরিমানে গ্রহণের ফলে।
- পুষ্টিকর খাবার এর অভাবে।
- গর্ভবতী মায়ের ভিটামিন বি১ এর ঘাটতি থাকলে সন্তান এর এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বেরিবেরি রোগ এর লক্ষণ
ত্বকের উপর সাধারণত বেরিবেরি রোগ এর প্রভাব পড়ে। দেহে এই রোগ দেখা দিলে নানা ধরনের চর্মরোগেরও সৃষ্টি হয়। এই রোগ সহজে চিহ্নিত করা যায় না। তবে কিছু লক্ষণ এর মাধ্যমে তা চিহ্নিত করা সম্ভব।
অবসাদ
বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত রোগীর মন সবসময় ভার থাকে। তারা যেকোনো কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে যা এই রোগের অন্যতম লক্ষণ।
বমি
অধিক বমি হওয়া এবং শরীরে দূর্বলতা দেখা দেওয়া বেরিবেরি রোগের মূল লক্ষণ। তাই বমি ও দূর্বলতা অবহেলা করা উচিত নয়।
ক্ষুধামন্দা
বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার রুচি কমে যায়। এসময় নিজের পছন্দের খাবার খেতেও ভালো লাগেনা। এমনটা হলে তাই অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। থ্যালাসেমিয়া কি এবং কেন হয়; এর লক্ষণ ও প্রতিরোধ বিস্তারিত জানুন!
শরীরের ওজন হ্রাস
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের ওজন দ্রুত কমতে থাকে। ফলে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। এসকল সমস্যা দেখা দিলে বেরিবেরি রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
বেরিবেরি রোগের চিকিৎসা
বেরিবেরির লক্ষণগুলির তীব্রতার উপর নির্ভর করে ভিটামিন বি১ ট্যাবলেট সেবনের মাধ্যমে এই রোগের কিছুটা নিরাময় সম্ভব। ভিটামিন বি১ এমন একটি ভিটামিন যা শরীর নিজে তৈরি করতে পারে না। তাই বেরিবেরি রোগ থেকে বাঁচার অন্যতম উপায় হলো ভিটামিন বি১ ট্যাবলেট গ্রহণ।
যদি বেরিবেরির লক্ষণগুলি তীব্র হয়ে থাকে তাহলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। এই রোগটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হলে শরীরে নানা ধরনের ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। পারকিনসন রোগ কি? এটি কেন হয়,এর লক্ষণ ও প্রতিরোধ জানুন!
অ্যালকোহল খেলে বেরিবেরি রোগ এর চিকিৎসায় বাধার সৃষ্টি হয়। তাই যথাসম্ভব অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকতে হবে। এবং বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ভিডিওঃ জেনে নিন বেরিবেরি রোগ কি? কেন হয়, এর লক্ষণ ও চিকিৎসা | Bangla Health Tips
বেরিবেরি রোগীর প্রয়োজনীয় খাবার
বেরিবেরি রোগ পুষ্টিকর খাবার এর অভাবে হয়ে থাকে। তাই এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের খাবারের প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হয়। বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার গ্রহন করতে হয়।
সাধারণ যেসব খাবার চিকিৎসকেরা খেতে বলে থাকেন তা হলো:
- গরুর কলিজা
- মুরগী
- কলা
- কাজু বাদাম
- ওট
- মিষ্টি আলু
- স্কোয়াশ
- ছোলা
শেষকথা
যেকোনো রোগ আমাদের দেহের অনেক ক্ষতি সাধন করে থাকে। বেরিবেরি রোগ তার ব্যতিক্রম নয়। তাই আমাদের উচিৎ সচেতনতা বজায় রাখা এবং নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা। এবং বেরিবেরি রোগ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন!