পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) দিনের একমাত্র ম্যাচে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে মাঠে নামে লাহোর কালান্দার্স এবং ইসলামাবাদ ইউনাইটেড। টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন লাহোর কালান্দার্স অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি।
এই দিনও ইসলামাবাদের হয়ে অধিনায়কত্ব করেন দলের দেশি অলরাউন্ডার আসিফ আলী। লাহোর কালান্দার্স দলে আব্দুল্লাহ শফিকের বদলে জায়গা পান সোহাইল আখতার। লাহোরের হয়ে সপ্তম আসরে এই ম্যাচই ছিল আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খানের শেষ ম্যাচ। কারণ, এই ম্যাচ পরই তাকে বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানিস্তানের সফরের জন্য বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে।
ইসলামাবাদ ইউনাইটেড দলেও আসে দুই পরিবর্তন। দলে হাসান আলী এবং মোহাম্মদ মুসার পরিবর্তে জায়গা পান বিদেশি মার্চেন্ট ডি লাং এবং মোহাম্মদ ওয়াসিম। ৭ম ম্যাচে কোয়েট্টা গ্ল্যাডিয়াটর্সের সাথে জয়ের ফলে আসরের প্লে-অফ ইতেমধ্যেই নিশ্চিত করেছে লাহোর কালান্দার্স। কিন্তু, কোয়ালিফায়ার-১ এ যাওয়ার জন্য তাদের সাথে লড়াই করছে পেশাওয়ার জালমি।
তাই, কোয়ালিফায়ার-১ যাওয়ার জন্য এই ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ লাহোর কালান্দার্সের জন্য। অন্যদিকে, প্লে-অফের খেলা নিশ্চিত করতে হলে জয়ের কোনো বিকল্প নেই ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের। তাই, এই ম্যাচটি ইসলামাবাদের জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচ।
১ম ইনিংস:
টস জিতে লাহোরের হয়ে ব্যাটিং করতে নামেন দলের দেশি ওপেনার ফখর জামান এবং বিদেশি ওপেনার ফিল সল্ট। ইনিংসের শুরুতেই হোঁচট খায় লাহোর কালান্দার্স। দ্বিতীয় ওভারেই ফিল সল্ট মাত্র ২ রান করে সাজ ঘরে ফিরেন।
তারপর, তার বদলি হিসেবে নামা কামরান গুলামও মাঠে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি। কামরান গুলাম আউট হওয়ার পর মোহাম্মদ হাফিজও ইনিংসের ৩য় ওভারে রান আউটের শিকার হন। এরপর, হ্যারি ব্রুক নামলে তিনিও, ফখর জামান দুই জনে মিলে দলের হয়ে ঝড়ো জুটির সূচনা করেন। পাওয়ার-প্লের ৬ ওভার শেষে লাহোরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটের বিনিময়ে ৪৮ রান।
ফখর জামান ও হ্যারি ব্রুক দুই জনই ঝড়ো ইনিংস চালিয়ে যেতে থাকেন এবং ইনিংসের ১৩তম ওভারে দুই জনই যথাক্রমে ৩৯ ও ২৭ বলে নিজেদের ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন। একই ওভারের শেষ বলে ফখর জামান ১০১ রানের জুটি করে ৪১ বলে ৫১ রান করে জহির খানের শিকার হয়ে আউট হলে তার বদলি হিসেবে নামা সোহাইল আখতারও দলের জন্য তেমন ভালো ইনিংস খেলতে পারেননি।
অন্যদিকে, দলকে একাই এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দলের বিদেশি ব্যাটসম্যান হ্যারি ব্রুক। তিনি ইনিংসের ১৯তম ওভারের শেষের দিকে মাত্র ৪৮ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন। যা, পিএসএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। ইনিংসের শেষ ওভারের শেষ বলে ডেভিড উইসে ১২ বলে ১৭ রান আউট হলেও ৪৯ বলে ১০২ রান করে অপরাজিত ছিলেন হ্যারি ব্রুক।
ফলে, ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯৭ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় লাহোর কালান্দার্স। ইসলামাবাদের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ১৯৮ রানের। ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের হয়ে ৪ ওভারে করে ২৮ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন ফাহিম আশরাফ।
২য় ইনিংস:
১৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইসলামাবাদের আফগান ওপেনার রাহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং আরেক ওপেনার মুবাসির খান ভালো একটা শুরুর আভাস দেন। কিন্তু, ইসলামাবাদের দুই ওপেনার রাহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং মুবাসির খানকে ইনিংস ৩য় ওভারেই পর পর দুই বলে শিকার করেন লাহোর অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি।
তারপর, বিদেশি অলরাউন্ডার লিয়াম ডসন এবং মোহাম্মদ ওয়াসিম দলের হাল ধরার চেষ্টা করলেও মোহাম্মদ ওয়াসিম ইনিংসের ৭ম ওভারের শুরুতেই ১৪ বলে মাত্র ১২ রান করেই আউট হয়ে যান। পাওয়ার-প্লের প্রথম ৬ ওভারে ইসলামাবাদ ইউনাইটেড সংগ্রহ করে দুই উইকেটের ব্যবধানে ৫৯ রান। এরপর, আজম খান এবং লিয়াম ডসন দলকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকলেও ইনিংসের ১১তম ওভারে আজম খান, রশিদ খানের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরলে লিয়াম ডসনও বর বেশিক্ষণ মাঠে টিকে থাকতে পারেননি।
তিনিও ২৬ বলে ৩১ রান করে সাজ ঘরে ফিরেন। তারপর, ইসলামাবাদ নিয়মিত বিরতিতে অধিনায়ক আসিফ আলী, ফাহিম আশরাফ, মার্চেন্ট ডি লাং এবং ওয়াকাস মাকসুদদের উইকেট হারাতে থাকলে ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩১ রানে থামে ইসলামাবাদ ইউনাইটেড। ফলে, ৬৬ রানের বিশাল জয় পায় লাহোর এবং আসরে নিজেদের ৬ষ্ঠ জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে কোয়ালিফায়ার-১ এর দৌড়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে যায় লাহোর।
ইসলামাবাদের হয়ে ২৬ বলে ৩০ করে অপরাজিত ছিলেন দানিশ আজিজ। লাহোর কালান্দার্সের হয়ে সর্বোচ্চ ২ টি করে উইকেট সংগ্রহ করেন দলের অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি, জামান খান, হারিস রউফ এবং দলের হয়ে নিজের শেষ ম্যাচ খেলা রশিদ খান। অপরদিকে, প্লে-অফের সমীকরণ আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায় ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের জন্য।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ: হ্যারি ব্রুক ১০২* (৪৯)
স্কোর:
লাহোর কালান্দার্স – ১৯৭/০৬ (২০ ওভার)
হ্যারি ব্রুক ১০২*(৪৯) ; ফখর জামান ৫১(৪১)
ফাহিম আশরাফ ৩/২৮ (৪ ওভার) ; লিয়াম ডসন ১/২১ (৩ ওভার)
ইসলামাবাদ ইউনাইটেড – ১৩১/০৯ (২০ ওভার)
লিয়াম ডসন ৩১(২৬) ; দানিশ আজিজ ৩০(২৬)
রশিদ খান ২/১৯ (৪ ওভার) ; শাহিন শাহ আফ্রিদি ২/২৮ (৪ ওভার)