ইংল্যান্ডের বিপক্ষে

বিশ্বকাপের ২য় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শোচনীয় হার বাংলাদেশের!

ধর্মশালায় নিজেদের ২য় ম্যাচে একে অপরের মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশ। ১ম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হেঁসে খেলে হারিয়ে দেওয়া বাংলাদেশ দল ছিল বেশ আত্মবিশ্বাসী। 

অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে হারের পর এই ম্যাচে জয়ের জন্য মুখিয়ে ছিল জস বাটলারের দল।

১ম ম্যাচের ন্যায় ২য় ম্যাচেও টসে জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে পাঠান টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের দলে আসে একটি পরিবর্তন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জায়গায় ৬ষ্ঠ বোলিং অপশন হিসেবে একাদশে যুক্ত করা হয় শেখ মাহেদীকে।

ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের দলেও ছিল ১ পরিবর্তন। মঈন আলিকে বাদ দিয়ে বাড়তি পেসার হিসেবে একাদশে সুযোগ পান রিসি টপলে।

বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, তাওহীদ হৃদয়, মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মাহেদী, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান।

ইংল্যান্ড একাদশ: জস বাটলার (অধিনায়ক), জনি বেয়ারস্টো, দাউইদ মালান, জো রুট, হ্যারি ব্রুক, লিয়াম লিভিংস্টোন, স্যাম কারান, ক্রিস ওকস, মার্ক উড, আদিল রশিদ, রিসি টপলে।

ম্যাচের ১ম ইনিংস

ইংল্যান্ডের হয়ে ব্যাটিংয়ে ১ম ইনিংসের শুরুটা করেন বেয়ারস্টো ও মালান। শুরু থেকেই দুই ওপেনার খেলতে থাকেন আক্রমণাত্মক মানসিকতার সাথে। এই দুই ওপেনারের চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে টাইগারদের হয়ে কাজের কাজ করতে পারছিলেননা কেউই। 

মুস্তাফিজ, তাসকিন, শেখ মাহেদী, সাকিব সবাইকে দেখেশুনে খেলে থাকে মালান ও বেয়ারস্টো জুটি। নিজের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৩৯ বলে ফিফটি করেন মালান। যেখানে, মাত্র ১৬ ওভারেই দলীয় ১০০ রান পূর্ণ করে ইংলিশরা। 

টাইগারদের হয়ে প্রথম উইকেটের দেখা পান অধিনায়ক সাকিব। ৫২ রান করা বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে ১১৫ রানের পার্টনারশিপ ভাঙেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। অপরপ্রান্তে ঠিকই নিজের রানের চাকা সচল রাখেন দাউইদ মালান। 

বেয়ারস্টোর পর জো রুটকেও সাথে নিয়ে নিজের ব্যাটিং তান্ডব চালিয়ে যান এই ব্যাটার। ফলে, ৩১.২ ওভারে ব্যাক্তিগত ৯১ বলে বিশ্বকাপে নিজের ১ম সেঞ্চুরির দেখা পান দাউইদ মালান। 

সেঞ্চুরি করে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেন তিনি। মিরাজের ১ ওভারে ২১ রান নেওয়ার পাশাপাশি প্রতি ওভারেই বাউন্ডারির দেখা পাচ্ছিলেন এই ওপেনার। অবশেষে, ১০৭ বলে ১৪০ করে শেখ মাহেদীর বলে বোল্ড আউট হয়ে নিজের ইনিংসের ইতি টানেন তিনি। 

এরপর, আসা যাওয়ার মিছিলে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে থ্রি লায়ন্সরা। মালানের পর ২০ রান করা জস বাটলার, ৮২ রানে জো রুট, ০ রান করা লিয়াম লিভিংস্টোন ফিরেন দ্রুতই। শেষ ১০ ওভারে ৬৬ রানের বিপরীতে ৬ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশি বোলাররা। ফলে, নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ১ উইকেট হাতে রেখে ৩৬৪ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় ইংল্যান্ড।

ম্যাচের ২য় ইনিংস

৩৬৫ রানের পাহাড় সমান লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথমেই হোঁচট খায় টাইগাররা। নিয়মিত ওপেনিংয়ে লিটন দাসের সাথে বারবার সুযোগ পেয়েও আরও একবার ব্যর্থ তানজিদ তামিম। ১ রান করে রিসি টপলের বলে ক্যাচ আউট হন এই ওপেনার। 

পরের বলেই কোনো রান করা শান্তকে ফিরিয়ে নিজের হ্যাট্রিকের সুযোগ তৈরি করেন টপলে। হ্যাট্রিক করতে না পরলেও নিজের করা ৩য় ওভারে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের অন্যতম ভরসা সাকিবকে ফিরিয়ে ৩য় উইকেটের দেখা পান এই পেসার। 

দলের টপ অর্ডাররা আসা যাওয়ার মধ্যে থাকলেও ইংলিশ বোলারদের বিপক্ষে দেখেশুনে ভালোভাবেই খেলছিলেন লিটন দাস। তবে তাকে কেউই যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। ম্যাচে ৫ নং-এ ব্যাটিং করতে নামা মিরাজ মাত্র ৮ রানে বাটলারের কাছে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। 

এরপর, দলের হয়ে হাল ধরেন লিটন ও মুশফিক। দুজনের দায়িত্বসুলভ ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যেতে থাকে দলের স্কোরবোর্ড। কিন্তু, ৭৬ রান করা লিটনকে ফিরিয়ে এই দুই ব্যাটারের ৭২ রানের জুটি ভাঙেন ক্রিস ওকস। 

লাল-সবুজ জার্সিধারীদের হয়ে শেষ চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়েই প্যাভিলিয়নে যান তাওহীদ হৃদয়। শেষে, শেখ মাহেদীর ১৪, শরিফুলের ১২ ও তাসকিনের যোগ করা ১৫ রানে সব উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রানের বড় হারের লজ্জা পায় চান্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। 

ব্যাটিংয়ে থ্রি লায়ন্সদের হয়ে ১০৭ বলে ১৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংসের ফলে ম্যাচ সেরা হয়েছেন জয়ের অন্যতম কারিগর দাউইদ মালান।

ম্যাচ স্কোরবোর্ড (Match Scoreboard)

ইংল্যান্ড   ৩৬৪/০৯ (৫০ ওভার)

দাউইদ মালান – ১৪০ (১০৭)

শেখ মাহেদী – ৪/৭১ (৮ ওভার)

বাংলাদেশ   ২২৭/১০ (৪৯.২ ওভার)

লিটন দাস – ৭৬ (৬৬)

রিসি টপলে – ৪/৪৩ (১০ ওভার)

ম্যাচ সেরা: দাউইদ মালান

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top