‘দ্যা অ্যাশেজের’ ৭৩তম আসরের আয়োজক দেশ ইংল্যান্ড। এর আগে দুই দলের মুখোমুখি ৭২ বারের লড়াইয়ে অজিদের সিরিজ জয় ৩৪ বার এবং ইংলিশদের জয় ৩২ বার।
৭৩তম আসরের পাচঁ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে এডজবাস্টনে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন স্বাগতিক দলের অধিনায়ক বেন স্টোকস। অ্যাশেজের জন্য অবসর ভেঙ্গে আবারও ইংল্যান্ড দলে ফিরেন অলরাউন্ডার মঈন আলি।
ইনিংসের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি টসে জিতে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ডের। ওপেনার বেন ডাকেট শুরুতেই সাজ ঘরে ফিরলেও অর্ধ শতক করে স্কট বোল্যান্ডের শিকার হন আরেক ওপেনার জ্যাক ক্রলি।
হ্যারি ব্রুক এবং অধিনায়ক বেন স্টোকসও দলের জন্য ভালো পারফর্ম্যান্স করতে পারেননি। তারপর, দলের হাল ধরেন জনি বেয়ারস্টো এবং জো রুট। দুই মিডল অর্ডার ব্যাটারই নিজেদের ব্যক্তিগত অর্ধ শতক পূর্ণ করেন।
বেয়ারস্টো ৭৮ রানে আউট হলেও নিজের ক্যারিয়ারের ৩০তম সেঞ্চুরি তুলে রেকর্ড করেন জো রুট। ইংলিশরা তাদের ইনিংস ঘোষণা করে ৩৯৩ রানে।
১৪ রান করে প্রথম দিন শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমেই ধাক্কা খায় অজিরা। দলের দুই ব্যাটার ডেভিড ওয়ার্নার এবং মার্নাস লাবুশেন ফিরেন একই ওভারে।
প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায় থাকা অজিদের হাল ধরেন দলের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার ট্রাভিস হেড এবং উসমান খাজা। ট্রাভিস ফিফটি করে প্যাভিলিয়নে ফিরেন।
অপরদিকে, একাই দলকে এগিয়ে নিয়ে নিজের শতক পূর্ণ করেন উসমান খাজা। ক্রিসের অপরপাশ থেকে তাকে যথাযথ সঙ্গ দেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারি।
খাজা ১৪১, ক্যারি ৬৬ এবং প্যাট কামিন্সের ৩৮ রানের ইনিংসে ৩৮৬ রান করে প্রথম ইনিংস শেষ করে সফরকারীরা। ফলে, ৭ রানের লিড পায় ইংল্যান্ড।
চতুর্থ দিনে ব্যাটিং করতে নেমে আবারও বিপাকে পড়ে ইংলিশরা। দুই ওপেনারকে হারিয়ে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুগতে থাকে স্বাগতিকরা। বৃষ্টির জন্য খেলা কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর ব্যাটিংয়ে নামলে ওলি পোপকে হারায় দলটি।
দুই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান জো রুট ও হ্যারি ব্রুক এবং ক্যাপ্টেন বেন স্টোকস চল্লিশের ঘরে আউট হয়ে মাঠ ছাড়লে ২৭৩ রানে থামে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস। সিরিজের প্রথম টেস্ট জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮১ রানের।
২৮১ রানের মাঝারি টার্গেট তাড়া করতে নামা অজিদের হয়ে ভালো কোনো ইনিংস খেলতে পারেননি ডেভিড ওয়ার্নার, লাবুশেন এবং স্টিভেন স্মিথদের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটাররা।
অন্যদিকে, একপ্রান্ত সামলে রেখে একাই দলকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান ওপেনার উসমান খাজা। ১০৭ রানে ৩ উইকেটে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করে দুই দল।
শেষ দিনে বৃষ্টি বাঁধায় প্রথম সেশনে খেলা আর মাঠে গড়ায়নি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেশনের ৬৭ ওভারে ম্যাচ জিততে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ১৭৪ রান এবং ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৭ উইকেট।
শেষ দিনে দ্বিতীয় সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমেই স্টুয়ার্ট ব্রডের শিকার হন চতুর্থ দিনের শেষ দিকে “নাইট ওয়াচম্যান” হিসেবে ব্যাট করতে নামা স্কট বোল্যান্ড।
নিজের ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসের ন্যায় দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় থাকা অজি দলের একাই হাল ধরেন খাজা। তুলে নেন নিজের ফিফটিও।
উসমান খাজা অর্ধ শতক করে বেন স্টোকসের শিকার হলে এরপর অ্যালেক্স ক্যারিও মাত্র ২০ রান করে আউট হয়ে ফিরেন।
এই দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখে ইংলিশরা৷ কিন্তু, শেষদিকে ইংল্যান্ডের জয়ের স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও স্পিনার ন্যাথান লায়ন।
অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসের ৯৩তম ওভারে ওলি রবিনসনের বলে চার হাঁকিয়ে ২ উইকেটে ম্যাচ জয় করে অজিদের জয়ের নায়ক হন ক্যাপ্টেন প্যাট কামিন্স। শেষ দিনের রোমাঞ্চে এডজবাস্টন টেস্ট জয়ের মধ্য দিয়ে অ্যাশেজের পাঁচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেলো অস্ট্রেলিয়া।
প্রথম ও দ্বিতীয় ইনিংসে যথাক্রমে ১৪১ ও ৬৫ রান করে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হন অস্ট্রেলিয়া দলের জয়ের নায়ক ওপেনার উসমান খাজা।