বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যে

বিশাল সংগ্রহ তাড়া করে টাইগারদের জয়!

বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামে দুই দল। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টির কারণে বাতিল হওয়ায় পরে এই ম্যাচের শুরুতেই বৃষ্টির কারণে খেলা শুরু হতে দেরী হয়। শেষে ৫০ ওভার থেকে কমিয়ে ৪৫ ওভারে আনা হয় ম্যাচ। টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। 

আয়ারল্যান্ডের পক্ষে অপেনিংয়ে মাঠে নামে স্টিফেন ডোহেনি ও পল স্টারলিং। প্রথম ওভারেই একটি উইকেট তুলে নেয় হাসান মাহমুদ। প্রথম ওভারে ৫ম বলে কিপারের হাত বন্দি হয়ে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরে স্টারলিং। আরেক ওপেনার ডোহেনিকেও সাজঘরে ফেরায় হাসান মাহমুদ। ৭ম ওভারের প্রথম বলে ২১ বলে ১২ রানের ইনিংস খেলে মিরাজের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে ডোহেনি। 

এরপর তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলে আন্দ্রে বার্লবির্নে হ্যারি টেক্টর। দুজনের অসাধারণ ইনিংসে দ্রুত রান এগোতে থাকে আয়ারল্যান্ডের। তাদের জুটি ভাঙে শরিফুল ইসলাম। ৫৭ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলে মুশফিকের কাছেই হাত বন্দি হয় বার্লবির্নে।

এরপর টেক্টরকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে লরকান টাকের। তবে তাকে দ্রুতই সাজঘরে ফেরায় শরিফুল। ১১ বলে ১৬ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে টাকের। এরপর কার্টিস ক্যাম্পার ১১ বলে মাত্র ৮ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয়। 

অবশেষে মাঠে আসে জর্জ ডকরেল। আবারও শুরু হয় অসাধারণ পার্টনারশিপ। এবারে আরও দ্রুত রান এগোতে শুরু করে। কোনভাবেই তাদের থামাতে পারছিল না বোলাররা। সেঞ্চুরি করার পরে আরও আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করে হ্যারি টেক্টর।

অবশেষে টেক্টরকে থামায় ইবাদত হোসেন। ১০ টি ছক্কা ও ৭ চারে ১১৩ বলে ১৪০ রানের বিশাল ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে হ্যারি টেক্টর। এরপর মার্ক আদির নেমেই ২ ছক্কা হাঁকিয়ে ঝুলিতে আরও কিছু রান যুক্ত করে। 

অবশেষে নির্ধারিত ৪৫ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩১৯ রান। ৪৭ বলে ৭৪ রান করে অপরাজিত ছিল জর্জ ডকরেল। ৮ বলে ২০ রান করে অপরাজিত ছিল মার্ক আদির। বাংলাদেশের পক্ষে দু’টি করে উইকেট শিকার করে হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলাম। 

৩২০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। মাত্র ৯ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত কিছুটা টানার পরে লিটনও সাজঘরে ফিরে। ২১ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় লিটন।

এরপর দলের হাল ধরে শান্ত ও সাকিব আল হাসান। তারা দু’জনে মিলে দলীয় শতরান স্পর্শ করে। এরপরই আউট হয় সাকিব আল হাসান। ২৭ বলে ২৬ রানের ইনিংস নিয়ে সাজঘরে ফিরে সাকিব। এরপর তৌহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে দ্রুত এগোতে থাকে বাংলাদেশ। দুজনেই হাফ সেঞ্চুরি পূর্ন করে সেঞ্চুরির দিকে এগোতে থাকে।

তবে তা আর সম্ভব হয়নি হৃদয়ের। ৫৮ বলে ৬৮ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে তৌহিদ হৃদয়। হৃদয় ব্যর্থ হলেও সেঞ্চুরি পূর্ণ করে নাজমুল হোসেন শান্ত। ৯৩ বলে ১১৭ রানের বিশাল ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে শান্ত। তার ঝুলিতে ছিল ১২ টি চার ও ৩ টি ছক্কা। 

এরপর মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ দলকে জয়ের প্রান্তে নিয়ে যায়। ১২ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলে  আউট হয় মিরাজ। এরপর মাঠে আসে তাইজুল ইসলাম। তাইজুলকে সাথে নিয়েও বেশি কিছুটা এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

জয় হতে যখন মাত্র ১০ রান দূরে তখন আউট হয় তাইজুল। এতে মাঠে নামে শরিফুল ইসলাম। শরিফুলকে সাথে নিয়েই জয় এনে দেয় মুশফিকুর রহিম। সুইপ শর্টে পেছনে চার হাঁকিয়ে জয় পায় বাংলাদেশ। 

এতে ৩ বল বাকি থাকতেই ৩ উইকেটে জয় পায় টাইগাররা। ২৮ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল মুশফিকুর রহিম। আয়ারল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ দু’টি করে উইকেট শিকার করে না কার্টিস ক্যাম্পার ও জর্জ ডকরেল। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর : 

আয়ারল্যান্ড – ৩১৯/৬ (৪৫)

হ্যারি টেক্টর ১৪০ (১১৩)

জর্জ ডকরেল ৭৪ (৪৭)

আন্দ্রে বার্লবির্নে ৪২ (৫৭)

হাসান মাহমুদ ২ – ৪৮ – ৯

শরিফুল ইসলাম ২ – ৪৩ – ৯

বাংলাদেশ – ৩২০/৭ (৪৪.৩)

নাজমুল হোসেন শান্ত ১১৭(৯৩)

তৌহিদ হৃদয় ৬৮ (৫৮)

মুশফিকুর রহিম ৩৬ (২৮)

কার্টিস ক্যাম্পার ২ – ৩৭ – ৫

জর্জ ডকরেল ২ – ৫৮ – ৯

ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্ত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top