ফাইনালে সিলেট

রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে ফাইনালে সিলেট! ফাইনালে কুমিল্লা বনাম সিলেট! 

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ফাইনাল নিশ্চিত করেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। পয়েন্ট টেবিলের প্রথম পজিশনে থাকা সিলেট প্রথম ম্যাচ হেরেছে কুমিল্লার সাথে এবং বরিশালকে হারিয়েছে রংপুর। দ্বিতীয় ফাইনালিস্টের পজিশন নিশ্চিত করতে আজ মাঠে নেমে সিলেট স্ট্রাইকার্স ও রংপুর রাইডার্স। 

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় রংপুর। সিলেটের পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে নামে তৌহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথমে আস্তে ধীরে ব্যাটিং শুরু করে সিলেট। দুই ওপেনার মিলে দলকে টানতে থাকে। অবশেষে ওপেনিং জুটি ভাঙতে সক্ষম হয় মাহেদী হাসান।

৩০ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে মাহেদী হাসানের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্ত ফেরার পর তৌহিদ হৃদয়ের ইনিংসও আর বেশিদূর এগোয়নি। পরের ওভারেই ২৫ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলে হাসান মাহমুদের বলে ডোয়েন ব্রাভোর হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে হৃদয়। 

এরপর দলের হাল ধরে মাশরাফি বিন মুর্তজা ও জাকির হাসান। মাশরাফি প্রথম থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে শুরু করে। জাকির তাকে ভালো সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিল। তবে জাকিরের ইনিংসও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ১৩ বলে ১৬ রানের ইনিংস খেলে দাসুন শানাকার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে জাকির।

এরপর মাশরাফিকে সঙ্গ দিতে আসে রায়ান বার্ল। বার্লও নেমেই বাউন্ডারি হাঁকাতে শুরু করে। ২ টি চার ১ ছক্কায় ৬ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলে শীঘ্রই বিদায় নেয় বার্ল। 

অবশেষে মাশরাফিকে থামাতে সক্ষম হয় ডোয়েন ব্রাভো। ১৬ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলে নিকোলাস পরানের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে মাশরাফি। মাশরাফির পরের ওভারেই ৫ বলে ৬ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় মুশফিক। শেষে থিসারা পেরেরা ও জর্জ লিন্ডে। ১৫ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলে এক বল বাকি থাকতে রান আউট হয় পেরেরা। 

এতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮২ রান। ১০ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল জর্জ লিন্ডে। রংপুরের পক্ষে দু’টি করে উইকেট শিকার করে হাসান মাহমুদ ও দাসুন শানাকা। 

১৮৩ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে রংপুরের পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে আসে রনি তালুকদার ও স্যাম বিলিংস। তবে শুরুটা ভালো হয়নি রংপুরের। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই ৪ বলে ১ রানের ইনিংস খেলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে স্যাম।

এরপর শামীম হোসেন নেমে কিছুটা আশার আলো দেখালেও তার ইনিংসও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেয়নি রুবেল হোসেন। ৫ম ওভারে ১১ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলে জর্জ লিন্ডের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে শামীম। 

এরপর নিকোলাস পরানের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দিশেহারা হয়ে যায় সিলেটের বোলাররা। তবে পরান কোন ক্ষতি কারার আগেই তাকে ফেরায় লুক উড। ১ চার ও ৪ ছক্কায় ১৪ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে পরান। এরপর নুরুল হাসান সোহান ও রনি তালুকদার দলের হাল ধরে। তাদের অসাধারণ পার্টনারশিপে দ্রুত রান এগোতে থাকে রংপুরের।

অবশেষে তাদের জটি ভাঙতে সক্ষম হয় তানজিম হাসান সাকিব। ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই সোহানকে সাজঘরে ফেরায় সাকিব। ২৪ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে ফিরে সোহান। প্রচুর রানের চাপ থাকায় একই ওভারের ৪র্থ বলে রান নিতে গিয়ে রান আউট হয় রনি তালুকদার।

এরপর দাসুন শানাকা তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি। মাহেদী হাসানও মাত্র ২ রানে সাজঘরে ফিরে। এরপর ডোয়েন ব্রাভো নেমে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে থিসারা পেরেরার হাত বন্দি হয়ে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরে।

শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে শেষ বলে শানাকাকে বোল্ড করে রুবেল হোসেন। এতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে রংপুরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬৩ রান। ১৯ রানে জয় পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। সিলেটের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করে লুক উড। দু’টি করে উইকেট শিকার করে রুবেল হোসেন ও তানজিম হাসান সাকিব। 

এতে দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট হিসেবে ফাইনাল নিশ্চিত করলো সিলেট স্ট্রাইকার্স। সেমি ফাইনালেও দুজনে মুখোমুখি হয়ে বিশাল জয়ে ফাইনালে যায় কুমিল্লা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

সিলেট স্ট্রাইকার্স – ১৮২/৭ (২০) 

নাজমুল হোসেন শান্ত ৪০ (৩০) 

মাশরাফি বিন মুর্তজা ২৮ (১৬)

তৌহিদ হৃদয় ২৫ (২৫)

হাসান মাহমুদ ২ – ৩৪ – ৪

দাসুন শানাকা ২ – ৪৫ – ৪

রংপুর রাইডার্স – ১৬৩/৮ (২০)  

রনি তালুকদার ৬৬ (৫২)

নুরুল হাসান সোহান ৩৩ (২৪)

নিকোলাস পরান ৩০ (১৪)

লুক উড ৩ – ৩৪ – ৪

তানজিৃ হাসান সাকিব ২ – ১৯ – ৪

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top