bd vs nz

ইশ সোডির বোলিং ঘূর্ণিতে ধরাশায়ী বাংলাদেশ!

বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের ১ম ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। ২য় ম্যাচে আজ মিরপুরে আবারও ব্ল্যাক ক্যাপ্সদের মুখোমুখি হয় টাইগাররা।

সাকিব, মুশফিক, তাসকিন, শান্তদের ছাড়া তুলনামূলক তরুণ দল নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ দল। যেখানে, সিরিজে ১ম ম্যাচ জিততে দলের অভিজ্ঞ কেন উইলিয়ামসন, টম ল্যাথামদের ছাড়া লকি ফারগুসনের নেতৃত্বে একাদশ সাজায় নিউজিল্যান্ড।

টসে জিতে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক লকি ফারগুসন। ১ম ওয়ানডের একাদশ থেকে কোনো পরিবর্তন করেনি নিউজিল্যান্ড। কিন্তু, বাংলাদেশের একাদশে আসে ২টি পরিবর্তন। 

ওয়ানডেতে টাইগারদের হয়ে অভিষেক হয় পেসার খালেদ আহমেদের। ১ম ওয়ানডের স্কোয়াডে না থাকলেও ২য় ওয়ানডেতে দলের সাথে যুক্ত হন হাসান মাহমুদ। তাদের জায়গা করে দিতে দল থেকে বাদ পড়েন নুরুল হাসান সোহান ও তানজিম হাসান সাকিব।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, তানজিদ হাসান তামিম, সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাওহীদ হৃদয়, শেখ মাহেদী, নাসুম আহমেদ, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান, খালেদ আহমেদ।

নিউজিল্যান্ড একাদশ: লকি ফারগুসন (অধিনায়ক), ফিন এ্যালেন, উইল ইয়ং, চ্যাড বোয়েস, হেনরি নিকোল্স, টম ব্লান্ডেল, রাচিন রাবিন্দ্র, কোল ম্যাক্কঞ্চি, ইশ সোডি, ট্রেন্ট বোল্ট, কাইল জেমিসন।

ম্যাচের ১ম ইনিংস

টসে জিতে ব্যাটিং করতে নামা নিউজিল্যান্ড ৩য় ওভারেই তাদের ওপেনার উইল ইয়ংকে হারায়। ইয়ং এর পর দলের আরেক ওপেনার ফিন এ্যালেনও প্যাভিলিয়নে ফিরেন মুস্তাফিজের শিকার হয়ে। এরপর চ্যাড বোয়েসকে ফেরাতেও বেশি দেরি করেননি বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হওয়া খালেদ আহমেদ। 

পাওয়ার প্লে’র প্রথম ১০ ওবভারেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে নিউজিল্যান্ড। পরে, ব্যাটিংয়ে দলের হাল ধরেন উইকেটকিপার-ব্যাটার টম ব্লান্ডেল ও হেনরি নিকোল্স। দেখেশুনে খেলে দলের রানের চাকা সচল রাখেন এই দুই ব্যাটার। তাদের দায়িত্বসুলভ ব্যাটিংয়ে পিছিয়ে পড়া নিউজিল্যান্ড আবারও লড়াইয়ের আভাস দেয়। 

২৭তম ওভারে এসে খালেদ আহমেদের ২য় শিকারে পরিণত হয়ে ১ রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করেন হেনরি নিকোল্স। তবে, নিকোল্স ব্যর্থ হলেও অপর পাশে ঠিকই নিজের অর্ধ শতক পূরণ করেন ব্লান্ডেল। হেনরি নিকোল্স ও টম ব্লান্ডেলের জুটির পর আর কেউই মাঠে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেনি। 

ফলে, ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মধ্যে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তাসমান পাড়ের দেশটি। টম ব্লান্ডেল ৬৮ করে আউট হলেও রাচিন রাবিন্দ্র, কোল ম্যাক্কঞ্চি, কাইল জেমিসন ও ক্যাপ্টেন লকি ফারগুসন ফিরেন দ্রুতই। দলের হয়ে শেষ চেষ্টা চালিয়ে যান ইশ সোডি। 

মানকাডে সোডিকে আউট করলেও অধিনায়ক লিটন দাসের অনুরোধে উইকেটের আবেদন তুলে নিয়ে পুনরায় তাকে ফিরিয়ে আনেন হাসান মাহমুদ। অবশেষে, ৪৯তম ওভারে ১০ম উইকেট হিসেবে ইশ সোডি আউট হলেও তার ৩৫ রানের উপর ভর করে ২৫৪ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ দাঁড় করায় ব্ল্যাক ক্যাপ্সরা।

ম্যাচের ২য় ইনিংস

লিটন দাসের সাথে বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন এশিয়া কাপ মিস করা অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল। নতুনভাবে ফিরে তামিম ভালো শুরু করলেও মাত্র ৬ রানে আউট হয়ে নিজের অফ ফর্ম বজায় রাখেন লিটন। এরপর ক্রিসে আসেন জুনিয়র তামিম খ্যাত তানজিদ তামিম।

দুই তামিমের জুটি বেশ ভালোভাবে আগাতে থাকলেও ১১তম ওভারে এসে ১৬ রান করে নিজের উইকেট হারান তানজিদ তামিম। ১ বল পরেই ইশ সোডির ঘূর্ণিতে কোনো রান না করে তার ২য় শিকারে পরিণত হন সদ্য দলে ডাক পাওয়া সৌম্য সরকারও। 

এরপর ইশ সোডির কাছে রীতিমতো আত্মসমর্পণ করে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার। ৪ রানে তাওহীদ হৃদয়কে ফিরিয়ে মাত্র ৪ ওভারেই ৩ উইকেট তুলে নেন সোডি। তবে এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। টাইগারদের হয়ে তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হাল ধরার চেষ্টা করলেও তামিমকে ফিরিয়ে আবারও নিউজিল্যান্ডকে ব্রেক থ্রু এনে দেন এই লেগ স্পিনার। 

মাহমুদউল্লাহ একপ্রান্ত আগলে রেখে খেললেও অপরপ্রান্ত থেকে কেউই তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। শেখ মাহেদীর উইকেট নিয়ে পাঁচ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন ইশ সোডি। ভালো খেলেও হাফ সেঞ্চুরির ১ রান আগে ম্যাক্কঞ্চির কাছে নিজের উইকেট হারান মাহমুদউল্লাহ। 

পরে লাল-সবুজ প্রতিনিধিদের হয়ে আর কেউই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি। ৫ উইকেট শিকারের পর হাসান মাহমুদের উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডেতে প্রথম স্পিনার হিসেবে ৬ উইকেট নেওয়ার আরও এক কৃতিত্বে নাম লেখান ইশ সোডি। 

শেষে নাসুম আহমেদকে ২১ রানে ও খালেদ আহমেদকে ১ রানে ফিরিয়ে ১৬৮ রানে বাংলাদেশকে অলআউট করে ৮৬ রানের বিশাল জয় পায় সফররতরা। ফলে, ১ ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজে ১-০ ‘তে এগিয়ে গেল গ্যারি স্ট্যাড শিষ্যরা। ব্যাট হাতে ৩৫ রান ও বল হাতে ৩১ রান খরচে ৬ উইকেট শিকারে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন লেগ স্পিনার ইশ সোডি। 

ম্যাচের স্কোরবোর্ড (Match Scoreboard)

নিউজিল্যান্ড   ২৫৪/১০ (৪৯.২ ওভার)

টম ব্লান্ডেল – ৬৮ (৬৬)

শেখ মাহেদী – ৩/৪৫ (১০ ওভার)

বাংলাদেশ   ১৬৮/১০ (৪১.১ ওভার)

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ – ৪৯ (৭৬)

ইশ সোডি – ৬/৩৯ (১০ ওভার)

ম্যাচ সেরা – ইশ সোডি

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top